সীমান্তবর্তী এলাকায় বিএসএফের এলাকা বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। আর তার বিরুদ্ধেই প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে। বিএসএফ নিয়ে চর্চা জারি রয়েছে রাজ্যের বুদ্ধিজীবীমহলে। সোমবার কেন্দ্র সরকারের এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে এক আলোচনাসভার আয়োজন করা হয়েছিল কলকাতা প্রেস ক্লাবে। মানবাধিকার সুরক্ষা মঞ্চ বা মাসুম গণ সংগঠন আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন অভিনেত্রী- পরিচালিকা অপর্ণা সেন, আএসপি নেতা মনোজ ভট্টাচার্য থেকে শুরু করে একাধিক বিদ্বজন। সকলেই ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন সীমান্ত পরিস্থিতি নিয়ে।
ভারতীয় সীমানার ভিতরে ১৫ কিলোমিটার পর্যন্ত এলাকা এত দিন এই কেন্দ্রীয় সশস্ত্র পুলিশ বাহিনীর নজরদারির আওতায় ছিল, সেটিই বাড়িয়ে ৫০ কিলোমিটার পর্যন্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্র। এর ফলে মুর্শিদাবাদে এবং উত্তরবঙ্গের বেশ খানিকটা এলাকায় উদ্বেগ দেখা দিয়েছে।
বিএসএফের নিন্দা করেছেন শহরের বিদ্বজনেরা। অপর্ণা সেন বলেছেন, সীমান্তের ওই এলাকার মানুষগুলোর অবস্থা চোখে দেখা যায় না। তাঁরা না তো এপারের লোক, না ওপারের। কোনও দেশের নাগরিক নন তাঁরা। রাজনৈতিক স্বার্থে ভোটার কার্ড দেওয়া হয়েছে বটে তবে আর কোনও ডকুমেন্ট তাঁদের কাছে নেই। বিএসএফের কর্মীরাও ইচ্ছেমতো অত্যাচার চালান। বাচ্চারা স্কুলে যেতে চায় না। ভয়াবহ পরিস্থিতি সীমান্ত লাগোয়া এলাকায়। রাজ্য সরকার যেন এদিকটা একটু দেখে, ওঁদের কোনও ব্যবস্থা করে।
সমাজকর্মী রূপা চক্রবর্তী খান বলেছেন, কেন্দ্র সরকার যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তাতে বাংলার ৯-১০টি জেলা সম্পূর্ণভাবে বিএসএফের কব্জায় চলে গেছে। এই বিজেপি সরকার নাগরিক সমাজকে ভয় পায়। তাঁদের উপর দমন চালানোর জন্য ঘুরিয়ে রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করা হচ্ছে বাংলায়।
সীমান্তের মানুষেরা কেন দেশের মধ্যে থেকেই বিদেশি হয়ে ঘুরছেন, কেন আজ পর্যন্ত সীমান্তের খুন, ধর্ষণের কোনও বিচার হয়নি সেই প্রশ্ন তুলেছেন মাসুমের কিরীটী রায়। সমস্ত কিছু নিয়েই আন্দোলন করতে আমরা আজ একত্র হয়েছি, বলেন তিনি।
তয়েদুল ইসলামের কথায়, আমরা প্রথম থেকেই বলে এসেছি সীমান্ত এলাকায় বিএসএফ কোনও আইন মেনে কাজ করে না। তারা খুন, ধর্ষণ, অত্যাচার, চোরাচালান সবকিছু করছে। আমাদের দাবি, বিএসএফকে শুধুমাত্র সীমান্তে থাকতে হবে, কোনোভাবেই তারা জনপদে প্রবেশ করবে না। স্থানীয় কেউ বেআইনি কাজ করলে তার জন্য রাজ্য সরকার আছে, পুলিশ আছে। ওরা হস্তক্ষেপ করবে না। অর্থাৎ নতুন ৫০ কিলোমিটার এবং আগের ১৫ কিলোমিটার, বিএসএফের সম্পূর্ণ ক্ষমতাই প্রত্যাহার করতে হবে।