রাজ্যে আসন্ন কলকাতা ও হাওড়া পুরসভার নির্বাচন সম্পন্ন করতে রাজ্য পুলিশের উপরই ভরসা রাখছে রাজ্য নির্বাচন কমিশন। দুই পুর নির্বাচনের ব্লুপ্রিন্ট তৈরি করতে শনিবার রাজ্যের মুখ্য সচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদীর সঙ্গে বৈঠকে বসেছিল কমিশন। বৈঠকে ছিলেন স্বরাষ্ট্র সচিব বি পি গোপালিকা, রাজ্য পুলিশের ডিজি মনোজ মালব্য, স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণ স্বরূপ নিগম, এডিজি আইন-শৃঙ্খলা জাভেদ শামিম-সহ কমিশন ও সরকারের উচ্চপদস্থ কর্তারা। সূত্র অনুযায়ী, ওই বৈঠকেই স্থির হয়েছে যে রাজ্য পুলিশের নিরাপত্তার ঘেরাটোপেই পুরনির্বাচনের ভোট গ্রহণ হবে।
প্রসঙ্গত, অনেক আগে থেকেই পুরভোটে কেন্দ্রীয় বাহিনীর দাবি জানিয়ে রেখেছে রাজ্য বিজেপি। এ নিয়ে তারা একপ্রস্থ কমিশনের দফতরে দরবারও করেছে। নির্বাচন সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি জারির আগে যে সর্বদল বৈঠক হবে তাতেও কেন্দ্রীয় বাহিনীর দাবি মোতায়েন রেখে ভোট করার দাবি উঠবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। যদিও রাজ্য নির্বাচন কমিশন ও রাজ্য সরকার আপাতত রাজ্য পুলিশেই আস্থা রাখতে চাইছে। রাজ্য নির্বাচন কমিশনের এক কর্তার কথায়, কোনও রাজ্যেই পুর নির্বাচনে কেন্দ্রীয় বাহিনীর ব্যবহারের নজির নেই। সংশ্লিষ্ট রাজ্যের সশস্ত্র বাহিনী দিয়েই ভোট করানো হয়। এরাজ্যে বিগত পুর নির্বাচনগুলিতেও তেমনটাই হয়েছে।
উল্লেখ্য, কলকাতা পুরসভার ১৪৪টি ওয়ার্ডে মোট বুথের সংখ্যা ৪৭০০। হাওড়ার ৫০টি ওয়ার্ডে মোট ১২১৩টি বুথ। প্রাথমিকভাবে ঠিক হয়েছে, প্রতিটি বুথের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকবে একাধিক সশস্ত্র বাহিনী। সেক্ষেত্রে কলকাতা পুলিশ ও রাজ্যের বাহিনীকে কাজে লাগানো হবে। এদিনের বৈঠকে আরও ঠিক হয়েছে, সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন পরিচালনার জন্য ঠিক কত সংখ্যক বাহিনী প্রয়োজন তা আগামী সাত দিনের মধ্যে রাজ্য সরকারকে জানাবে কমিশন। সেইমতো বাহিনীর আয়োজন করবে সরকার।
পাশাপাশি এদিন নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা, কোভিড বিধি, ভোটকর্মী, বুথের পরিকাঠামো-সহ সার্বিক বিষয়ে আলোচনা হয়েছে দু’পক্ষের মধ্যে। নির্বাচন পরিচালনার ক্ষেত্রে সরকারের তরফে সব রকমের সহযোগিতার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। বৈঠকে কলকাতা ও হাওড়া দুই শহরের কোভিড পরিস্থিতি নিয়েও আলোচনা হয়েছে। ভোট সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি জারির পর প্রতিদিন এই দুই পুরসভা অন্তর্গত এলাকাগুলির পজিটিভিটি রেটের দিকে নজর রাখতে বলা হয়েছে। আগামী ১৭ই নভেম্বর ওয়ার্ডভিত্তিক খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হতে পারে। তারপরই নির্বাচনী নির্ঘণ্ট বা বিজ্ঞপ্তি জারি করবে কমিশন।