সম্প্রতি মেদিনীপুর লোকালের মহিলা কামরায় যুবকের কুকীর্তিতে নড়চড়ে বসল রেল। হাওড়ায় তৈরি হল আরপিএফের মহিলা বাহিনী। এই বাহিনী এবার মহিলা কামরার সুরক্ষা দেখভাল করবে। হাওড়া আরপিএফের বিভিন্ন পদ থেকে বাছাই মহিলা কর্মীদের নিয়ে গড়ে উঠল এই বাহিনী।
ট্রেন ছাড়ার মুহূর্তে লোকাল ট্রেনের মহিলা কামরায় উঠে পড়েন বহু পুরুষ যাত্রী। যাদের মধ্যে অনেকেই উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে উঠে মহিলাদের উত্ত্যক্ত করে থাকে বলে অভিযোগ। দিন কয়েক আগে মেদিনীপুর লোকালের মহিলা কামরায় এক যুবক চড়ে মহিলাদের সামনে অশালীন কাজকর্ম করতে থাকে।
মহিলা সুরক্ষা কর্মীদের জামায় লাগানো থাকবে ‘বডি ওয়ার্ন ক্যামেরা’। এই পদক্ষেপ যখন শুরু হয়েছে, তখনও রাতে মহিলা বগিতে পুরষযাত্রী অবলীলায় চড়ছেন বলে মহিলা যাত্রীদের অভিযোগ। তাঁরা জানান, আরপিএফ, জিআরপির, জওয়ান থেকে টিকিট পরীক্ষকরাই এই ধরনের যাত্রী। ‘সরষের মধ্যেই ভূতে’র আবির্ভাব দেখছেন মহিলা যাত্রীরা।
খড়গপুরের আরপিএফের সিনিয়র কমান্ড্যান্ট বিবেকানন্দ নারায়ণ বলেন, “মহিলা বগিতে আগের থেকেই নিরাপত্তা বাহিনী রাখা আছে। তাঁরাই কাজ করছেন। তবে এটা বিচ্ছিন্নভাবে উঠে আসা এক যুবকের কীর্তি। ধরপাকড় জোরদার করতেই নলপুরে দু’দিন রেল অবরোধ করেন স্থানীয়রা। এই যদি হয় মানুষের বিবেচনা, তবে কী করে অপরাধ রোখা যাবে।”
এই ঘটনায় কয়েকজন মহিলা ওই যুবককে জুতোপেটাও করেন। এরপর স্টেশন এলে মহিলাদের ডাকে সাড়া দিয়ে এগিয়ে আসেন পুরুষ যাত্রীরা। তাঁরাই তাকে উত্তম মধ্যম দিয়ে পুলিশের হাতে তুলে দেন। পুরো ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে। এরপরই নড়ে বসে রেল বোর্ড।
মেদিনীপুরের ট্রেনের ঘটনায় পরই মহিলাদের নিরাপত্তায় গাফিলতি নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠতে থাকে। এরপরই তড়িঘড়ি হাওড়ায় তৈরি হয় ‘মাতঙ্গিনী’ বাহিনী। আরপিএফ মহিলাদের নিয়ে এই বাহিনীর কর্মীরা মহিলা বগির সুরক্ষায় কাজ শুরু করেছে। মহিলাদের নিরাপত্তা নিয়ে প্রচার থেকে অসুবিধার মধ্যে পড়লে মহিলারা কী পদক্ষেপ নেবেন, কোন ফোন নম্বরে যোগাযোগ করবেন।
সংঘবদ্ধভাবে প্রতিবাদ গড়ে তোলার একাধিক পাঠ দেওয়ার পাশাপাশি মহিলা কামরায় চড়ে বসা পুরুষ যাত্রীকে গ্রেপ্তারও করা শুরু করেছে। মহিলা কর্মীরা অভিযুক্ত পুরুষ যাত্রীকে গ্রেপ্তার করতে পারবেন। ১৩৯ নম্বরে নিরাপত্তার জন্য আবেদন এলে সঙ্গে সঙ্গে হাজির হতে হবে মহিলা আরপিএফকেই।