নদীর মতোই আবহবান ধারার যাত্রী ভাষা। যা ভেসে বেড়ায় মানুষের মুখে মুখে। পৃথিবীর যে কোনও ভাষাই আসলে সমকালীন সমাজের দর্পণ। তাই কালস্রোতেই বাতিল হয়ে যায় বহু শব্দ, জন্ম হয় কলোকিয়াল নতুন শব্দের। সময়ের দাবিতে প্রতিদিনের কথোপকথনে ফিরে ফিরে আসে যে শব্দ, তাকেই বছরের সেরা শব্দের তকমা দিয়ে থাকে অক্সফোর্ড ইংরেজি ডিকশনারি কর্তৃপক্ষ। ২০২১ সালে সেই শিরোপা পেল ‘ভ্যাক্স’ শব্দটি। যা ভ্যাকসিন শব্দটির সংক্ষিপ্ত রূপ।
গত ২০২০ সাল থেকে করোনা ভাইরাসে বিপর্যস্ত হয় গোটা পৃথিবী। স্বাভাবিক ভাবেই ওই বছরে সবথেকে বেশি ব্যবহৃত শব্দগুলির মধ্যে ছিল ‘প্যান্ডেমিক’ ও ‘লকডাউন’। তবে গত বছরে আলাদা করে কোনও শব্দকে সেরা হিসেবে বেছে নেয়নি অক্সফোর্ড কর্তৃপক্ষ। তবে চলতি বছরে ‘ভ্যাক্স’ শব্দটিকে বছরের সেরা শব্দ হিসেবে বেছে নেওয়া হল। অক্সফোর্ড কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, গত বছরের তুলনায় ৭২ গুণ বেশি ব্যবহৃত হয়েছে ‘ভ্যাক্স’ শব্দটি। মহামারীর বিরুদ্ধে যুদ্ধে করোনার ভ্যাকসিনই একমাত্র মুশকিল আসান। মানুষের জীবনে তার অবিকল্প ব্যবহারই শব্দটির বহুল ব্যবহারের অন্যতম কারণ। ফলে সেই শব্দের সবচেয়ে বেশি করে উচ্চারিত হওয়াটাই স্বাভাবিক।
উল্লেখ্য, ইংরেজি ভাষায় ১৭৯৯ সালে অন্তর্ভুক্ত হয় ‘ভ্যাকসিন’ শব্দটি। পেছন পেছন অন্তর্ভুক্ত হয় ‘ভ্যাকসিনেশন’, ‘ভ্যাকসিনেট’ ইত্যাদি শব্দও। ল্যাটিন শব্দ ভ্যাকা থেকে এসেছে ‘ভ্যাকসিন’ শব্দটি। যে শব্দের হল অর্থ গরু। পদার্থবিদ এডওয়ার্ড জেনার গুটি বসন্তের টিকা আবিষ্কার করেছিলেন আঠারো শতকে। যার পর বদলে গিয়েছিল গোটা বিশ্বের স্বাস্থ্য পরিকাঠামো। এরপরই ব্যবহার বাড়তে থাকে ‘ভ্যাকসিন’ শব্দটির। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে অভিধানে স্থায়ী জায়গাও করে নেয় শব্দটি। ‘ভ্যাক্স’ বা ‘ভ্যাকসিনে’র সমার্থক শব্দ হল ‘জ্যাব’। যেটিও গত বছরের অন্যতম জনপ্রিয় শব্দ ছিল। জানিয়েছে অক্সফোর্ড ইংরেজি ডিকশনারি কর্তৃপক্ষ। উল্লেখ্য, অক্সফোর্ড কর্তৃপক্ষ ২০১৩ সালে ‘সেলফি’কে বর্ষসেরা শব্দের তকমা দিয়েছিল।