পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী মঙ্গলবার বিধানসভায় শপথ নিয়ে নতুন পথচলা শুরু করলেন রাজ্যের নবনির্বাচিত চার তৃণমূল বিধায়ক। বিতর্কের অবসান ঘটিয়ে পরিষদীয় আইন অনুযায়ী বিধানসভা কক্ষে তাঁদের শপথ পড়ালেন ডেপুটি স্পিকার। শপথ নিলেন খড়দহের শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়, দিনহাটার উদয়ন গুহ, গোসাবার সুব্রত মণ্ডল, শান্তিপুরের ব্রজকিশোর গোস্বামী।
কিন্তু তাৎপর্যপূর্ণভাবে বিধানসভায় শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন না প্রধান বিরোধী দল, বিজেপির কোনও বিধায়ক। আর তাঁদের অনুপস্থিতিতে বেশ ক্ষুব্ধ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিজেপির ভূমিকা নিয়ে তীব্র সমালোচনা করলেন পরিষদীয় মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ও।
দাম বাড়াবে ওরা, আর রাজ্যকে বাড়তি টাকা দিতে হবে?” একাধিক ইস্যুতেই এদিন বিজেপির বিরোধিতায় সরব হতে দেখা গেল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। কীভাবে রাজ্য সরকার বিভিন্ন সামাজিক প্রকল্পে মানুষকে নাগরিক পরিষেবা দিচ্ছে, তা বিশদে উল্লেখ করেন মুখ্যমন্ত্রী। পাশাপাশি বলেন, কেন্দ্রের অসহযোগিতা সত্ত্বেও প্রতিকূলতা কাটিয়ে কাজ করতে হচ্ছে রাজ্য সরকারকে।
পরিষদীয় মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ও বিজেপির ভূমিকা নিয়ে সমালোচনা করেন। নাম না করে তিনি রাজ্যপালকে বার্তা দিলেন। প্রশাসনিক কাজে রাজ্য সরকার তাঁর সহযোগিতা আশা করেন বলে মন্তব্য মন্ত্রীর। অথচ তেমন সহযোগিতা না মেলায় আক্ষেপ থেকেই যাচ্ছে। এ থেকেই স্পষ্ট, বিধায়কদের শপথ নিয়ে রাজ্যপাল-ডেপুটি স্পিকার সংঘাতকেই ইঙ্গিত করলেন তিনি।
রাজ্যপাল নাকি ডেপুটি স্পিকার? নবনির্বাচিত বিধায়কদের কে শপথ পাঠ করাবেন? এ নিয়ে বহু বিতর্কের পর সেই ভার দেওয়া হয় ডেপুটি স্পিকারকেই। সেইমতো মঙ্গলবার শপথগ্রহণ অনুষ্ঠান হয় বিধানসভা কক্ষে। মুখ্যমন্ত্রী নিজে উপস্থিত ছিলেন সেখানে। নতুন জনপ্রতিনিধিদের তিনি শুভেচ্ছায় ভরিয়ে দেন। এরপর নিজে বক্তব্য রাখতে গিয়ে বিরোধী দলের সমালোচনা করেন।
মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, ”এই নতুন চারজন আজ শপথ নিলেন বিধায়ক পদে। সকলের উচিত ছিল, তাঁদের সামনে এসে অভিনন্দন জানানো। কিন্তু কাদেরই বা বলব? অনেকেই তো নেই। তাঁদের যখন ইচ্ছে, বিধানসভায় আসবেন। ইচ্ছে না হলে আসবেন না। একটা দল বিধানসভা কীভাবে এড়িয়ে যাচ্ছে, বুঝতে পারছি না। এটা কাম্য নয়।”
জ্বালানির উপর থেকে ভ্যাট কমানোর দাবিতে সোমবারের পর মঙ্গলবারও বিজেপির বিক্ষোভ কর্মসূচি আছে। রাজ্যের পেট্রল পাম্পগুলিতে প্রতিবাদে শামিল তাঁরা। সেই কারণে হয়ত বিধানসভায় গরহাজির বিধায়করা। এই প্রসঙ্গ না তুলেই মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ”আন্দোলনে নেমেছেন ওঁরা। যাঁরা আন্দোলনের আ-ও জানেন না, তাঁরা আন্দোলন করছেন? কিন্তু জানতে চাইছেন না তো কীভাবে আমরা দাম নিয়ন্ত্রণ করব।