শুক্রবার বাড়ি ফেরার কথা ছিল তাঁর। কিন্তু বৃহস্পতিবার রাতে আচমকাই এসএসকেএম হাসপাতালে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন রাজ্যের মন্ত্রী তথা বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ সুব্রত মুখোপাধ্যায়। তবে তিনি না রইলেও রয়ে গেল তাঁর বহু কীর্তি। যেমন তাঁর বাংলায় লেখা এক শান্তির বার্তা রয়ে গেল অনন্ত মহাকাশে। হ্যাঁ, নাসার তরফে মহাকাশের রহস্য উন্মোচনে একটি অভিযান চালানো হয়েছিল। সেই মহাকাশযানে সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের বাংলায় লেখা একটি বার্তাও রয়েছে।
প্রসঙ্গত, ১৯৭৭ সাল নাসার তরফে ভয়েজার-ওয়ান নামে এক মহাকাশ পাঠানো হয়েছিল মহাকাশে। ৪৪ বছর ধরে মহাকাশে ছুটে বেড়াচ্ছে সেই যান। এই মুহূর্তে পৃথিবীর সঙ্গে তার দূরত্ব ২৩ হাজার ১৯২ বিলিয়ন কিমি। ওই মহাকাশ যানে ভিনগ্রহের বাসিন্দাদের উদ্দেশ্যে পৃথিবীর কিছু নমুমা রাখা হয়েছিল। যার মধ্যে ছিল বিশ্বের ৫৫টি বাছাই করা ভাষায় শান্তির বার্তা। প্রচীন গ্রিক, পর্তুগিজ, কাতোনিজ, রুশ, স্প্যানিশ, আরবির মতো ভাষার সঙ্গে সেখানে ছিল হিন্দি, পাঞ্জাবি এবং বাংলা ভাষাও ছিল সেই তালিকায়। আর বাংলায় লেখা ওই শান্তির বার্তা লেখার দায়িত্ব পরেছিল সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের ওপর। তিনি ছোট্ট একটি বাক্যে লিখেছিলেন, নমস্কার, বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠিত হোক।
ভয়জার ওয়ানে মহাকাশযানের গোল্ডেন ভয়েসের দায়িত্বে ছিলেন কর্নেলি বিশ্ববিদ্যালয়ের মহাকাশ বিজ্ঞানী কার্ল সাগান। এই মহাকাশযান যদি কখনও কোনও ভিনগ্রহীদের সন্ধান পায় তাহলে তার জন্য কিছু বার্তা পৃথিবীর তরফ থেকে দিয়ে রাখা উচিত। এই ভাবনা থেকে ওই মহাকাশ বিজ্ঞানী এক বছর ধরে গবেষণা চালিয়ে বিশ্বের বেশ কিছু শব্দ পছন্দ করেন। যার মধ্যে রয়েছে তিমির ডাক, শিশুর কান্না। বাছা হয় বাখ, মোৎসার্ট, বেঠোফেন, বিটলসের সঙ্গীতের অংশ। এছাড়া ছিল বিভিন্ন ভাষায় লেখা শান্তির বার্তাও। আজ না ফেরার দেশে পৌঁছে গিয়েছেন সুব্রত মুখোপাধ্যায়। কিন্তু তাঁর লেখা বার্তা রয়ে গেল অনন্ত মহাকাশে।