বৃহস্পতিবার রাতে প্রয়াত হয়েছেন রাজ্যের মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়। শোকস্তব্ধ রাজনৈতিক মহল। কলকাতা কর্পোরেশনের মেয়র হিসেবেও যথেষ্ট সফল ছিলেন সুব্রতবাবু। তাই তাঁর স্মৃতিতে শোকবিহ্বল কর্পোরেশনের কর্মীরা। তিনি যখন মেয়র ছিলেন তখনকার বেশিরভাগই কর্মী অবসর নিয়েছেন। তবে যাঁরা এখনও আছেন, তাঁরা প্রত্যেকে সুব্রত বাবুর সুনাম করছেন। কেউ বললেন, সেই সময় মাসের বেতন হত হাতে-হাতে। সুব্রত বাবু প্রথম সরাসরি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে বেতনের ব্যবস্থা করে দেন। একজন বললেন, “সুব্রত বাবু অমায়িক লোক ছিলেন। তিনি সবাইকেই যথেষ্ট সম্মান করতেন। প্রশাসনিক কাজকর্ম তাঁর মতো অনেক কম মানুষই বুঝতেন।”
আসা যাক জরিনার কথায়। কর্পোরেশনের সামনে ফুটপাথে থাকেন জরিনা। তিনি ১৯৬০ সাল থেকে এখানেই থাকেন। তিনি বললেন, সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের মৃত্যু সংবাদ তাঁকেও যথেষ্ট কষ্ট দিয়েছে। একবার সামনের পার্ক পরিষ্কার করে গাছ লাগানোর সময়, পৌর কর্মীরা সবকিছু পরিষ্কার করতে গিয়ে, তাঁর বাসস্থান ওখান থেকে তুলে ফেলে দিচ্ছিল। সেই সময় সুব্রত মুখোপাধ্যায় তাঁকে ওখান থেকে তুলতে দেননি। সুব্রত বাবু তাঁকে ওখানেই থাকতে বলেছিলেন। উল্লেখ্য, ছাত্র আন্দোলন থেকে কলকাতার মেয়র, প্রশাসক, দলের নেতা, গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রী, পুজো প্রিয় সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের জন্য লেখা শোকবার্তায় বিভিন্ন দিক থেকে একজন দক্ষ মানুষ ও শিক্ষক হওয়ার কথাই মনে করিয়ে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বাংলার রাজনীতিতে একজন বর্ণময় চরিত্র তিনি। তাঁর হাতেই শুরু হয়েছিল কলকাতা পুরসভার স্বর্ণযুগ।
গতকাল আলোর উৎসবে বাংলার রাজনৈতিক জগতে অন্ধকার নামিয়ে প্রয়াত হলেন রাজ্যের পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন-সহ চারটি দফতরের মন্ত্রী, কলকাতার প্রাক্তন মেয়র সুব্রত মুখোপাধ্যায়। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৫ বছর। আর দীর্ঘদিনের সহকর্মী, রাজনৈতিক মেন্টর ‘সুব্রতদা’র সংকটজনক অবস্থার খবর পেয়েই হাসপাতালে ছুটে এসেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এরপর হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে তিনি বলেন, ”এমন আলোর দিনে অন্ধকার নেমে আসবে ভাবতেও পারিনি। অনেক দুর্যোগ এসেছে, কিন্তু এটা ভীষণ বড় দুর্যোগ। সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের মতো মানুষ, এত প্রাণবন্ত তিনি, পার্টি অন্ত প্রাণ আর হবে কিনা জানি না।”