মুখে উন্নয়নের কথা বললেও রাজ্যবাসীর সুবিধা অসুবিধা যে কোনও খোঁজই রাখেন না উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ, সেটা আরও একবার প্রমাণ হল। একদিকে যখন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যের উন্নয়ন প্রসঙ্গে লম্বা-চওড়া ভাষণ দিচ্ছেন তখন তাঁর রাজ্যেই মাসের পর মাস বেতন পাচ্ছেন না স্কুলের মিড ডে মিলের রাঁধুনিরা। বিশেষজ্ঞদের মত, মুখে যে যাই বলুক না কেন উত্তরপ্রদেশে ইতিমধ্যেই দেখা দিয়েছে ভয়াবহ অর্থসংকট। আর তার মাশুল গুনছেন এই স্কুলের মিড ডে মিলের রান্না করা মহিলারা। গত কয়েক মাস ধরে তাঁরা তাঁদের প্রাপ্য বেতনের অপেক্ষায় দিন গুনছেন।
জানা গিয়েছে, উত্তরপ্রদেশের ভাদোহি জেলায় ২৮০০-এরও বেশি মহিলা এই রান্নার কাজের সঙ্গে যুক্ত। কিন্তু গত ৮ মাস ধরে তাঁদের হয় প্রাপ্য বেতনের কম বেতন দেওয়া হয়েছে নয়তো কোন কোন মাসে বেটন দেওয়াই হয়নি। অথচ তারাই বিনা বেতনে স্কুলের মিড ডে মিল তৈরি থেকে স্কুল পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখার মতো গুরুত্বপূর্ণ সমস্ত কাজ করে চলেছেন মাসের পর মাস ধরে। তার বিনিময়ে তাঁরা যে টাকা পান সেই টাকা দিয়ে তাঁরা নিজেদের ছেলেমেয়েদের পড়াশোনার কাজ চালান। কিন্তু বেতনের অভাবে সেই পড়াশোনার কাজও প্রায় বন্ধ হওয়ার মুখে।
একই অবস্থা উত্তরপ্রদেশের ফিরোজাবাদের। সেখানের উচ্চ প্রাথমিক স্কুল এবং নিম্ন প্রাথমিক স্কুলের বহু মহিলা রাঁধুনি দোল উৎসবের পর থেকে আর বেতন পাননি। ইটাওয়ার এক উচ্চ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কর্মী মোটামুটি একই অভিজ্ঞতার কথা জানালেন। তাঁর বেতনও গত চার মাস ধরে আটকে রেখেছে উত্তরপ্রদেশ সরকার।
আর মাত্র কয়েক দিনের অপেক্ষা। তারপরেই দীপাবলীর আলোর চমকে সেজে উঠবে গোটা দেশ। দেশের মধ্যে উত্তরপ্রদেশেই সবথেকে ধুমধাম করে পালিত হয় এই দীপাবলি উৎসব। প্রত্যেক বছর লক্ষ লক্ষ প্রদীপ জ্বালিয়ে বিশ্ব রেকর্ড করে যোগী আদিত্যনাথের এই রাজ্য। কিন্তু সেই রাজ্যেরই বিভিন্ন জেলার মহিলারা দীপাবলীর বোনাস তো দূর অস্ত প্রতিমাসের ন্যায্য বেতনটাও ঠিক সময়ে পাচ্ছেন না। তাঁদের অভিযোগ, ঠিক মতো বেতন না পাওয়ায় পরিবারের কেউ যদি অসুস্থ হয়ে পড়ে তাহলে তার ঠিক মতো চিকিৎসা পর্যন্ত করানো যাচ্ছে না। তাঁদের দাবি খুবই সামান্য। কোনও পুজো বোনাস, দীপাবলীর উপহারের আশা রাখেন না তাঁরা। শুধুমাত্র প্রত্যেক মাসে তাঁদের ন্যায্য বেতন ঠিক সময় দেওয়া হোক আপাতত তাতেই খুশি উত্তরপ্রদেশের নির্মলা দেবী, মিতালী দেবীরা।