মাছ-ফুটবল-লোক সংস্কৃতি। বাংলার সঙ্গে গোয়াকে ৩ সূত্রে জুড়ে দিলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গোয়ার রাজনীতির আঙিনায় পা রাখার পর প্রথমবার দলীয় কর্মীদের সঙ্গে বৈঠকেই সেরাজ্যের সঙ্গে বাংলার যোগসূত্র স্থাপনের চেষ্টা করলেন মমতা। বলে দিলেন, আমরা চাই বাংলার মতো গোয়াও শক্তিশালী হোক। আমি এখানে শুধু রাজনীতির জন্য আসিনি, উন্নয়নের জন্য এসেছি। এসেছি সংস্কৃতির জন্য।
মমতা বলেন, বাংলার সঙ্গে গোয়ার তিনটি বিষয়েই বেশি মিল আছে। এক ফুটবল। গোয়াতেও বহু ফুটবল ক্লাব আছে। বাংলার মানুষও ফুটবলপ্রেমী। আইএসএলের জন্য বাংলার এসসি ইস্টবেঙ্গল এবং এটিকে মোহনবাগান এখন গোয়াতেই অনুশীলন করছে। ফুটবলের পরই দুই রাজ্যের মৎস্যপ্রেম প্রসঙ্গ আনেন মুখ্যমন্ত্রী। মনে করিয়ে দেন, ‘গোয়ার মৎস্যজীবীরা বঞ্চিত। মানুষের কষ্টে আমরা কষ্ট পাই’। গোয়ার লোকসংস্কৃতির প্রসঙ্গও তুলে ধরেন মমতা।
গোয়া এবং বাংলাকে জুড়ে দেওয়ার মধ্যেও মমতার সূক্ষ্ম রাজনৈতিক ইঙ্গিত রয়েছে। তৃণমূল নেত্রী বুঝিয়ে দিতে চেয়েছেন, গোয়ায় তিনি বা তাঁর দল তৃণমূল বহিরাগত নয়। মমতা এদিন দলীয় সভায় বলে দেন, ‘আমি অভিন্ন ভারতে বিশ্বাস করি। আমি এখানে বহিরাগত নই। সারা ভারত আমার। একটা দলের নেত্রী হিসাবে, মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে দেশের যে কোনও জায়গায় যে কোনও সময় যেতে পারি। আমিও গোয়ার সন্তান’। তবে, মমতা এটাও স্পষ্ট করে দিয়েছেন, তৃণমূল ক্ষমতায় এলে মুখ্যমন্ত্রী হবেন গোয়ার ভূমিপুত্রই।
এরপরই মমতা স্পষ্ট করে দেন, গোয়ায় শুধু নিজেদের অস্তিত্ব প্রমাণের জন্য আসেননি তিনি। এসেছেন বিজেপিকে ক্ষমতা থেকে সরাতে। মমতা এদিন স্পষ্ট বলে দেন, ‘তৃণমূল কংগ্রেস গুরুত্বপূর্ণ শক্তি। আমরা কখনও আপস করিনি। আমরা এখানে সাইনবোর্ড হতে আসিনি। তৃণমূল কংগ্রেস বিক্রি হয় না। আমরা নিজেদের ১০০ শতাংশ দিয়ে লড়াই করব। বাংলার প্রকল্প গোয়াতেও হবে’। এরাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর সাফ কথা, ‘তৃণমূল গণতন্ত্রে বিশ্বাসী ও ধর্মনিরপেক্ষ দল। মানুষের কষ্টে আমরা কষ্ট পাই। বাংলার মতো অত বড় রাজ্যের মানুষের জন্য আমরা করতে পেরেছি। গোয়ার মানুষের জন্য করতে পারলে খুশি হব’।