বিধানসভায় ভরাডুবির পর বঙ্গ বিজেপিতে বেসুরোদের নামের তালিকা ক্রমেই বেড়েই চলেছে। সেই তালিকায় নয়া সংযোজন হয়েছেন তৃণমূল ছেড়ে দলে আসা প্রাক্তন সাংসদ অনুপম হাজরা। বাংলায় ভরাডুবির কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে অনুপম বলেছেন, ‘ভোটের আগে তৃণমূল থেকে আসা নেতাদের বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছিল। সিনেমা জগৎ থেকে আসা ব্যক্তিদের নিয়ে বেশি নাচানাচি হয়েছিল। আর সেই কারণে দলে কোণঠাসা হয়ে পড়েছিলেন পুরানো নেতা-কর্মীরা। আসলে কৌশল যে ভুল হয়েছিল, তা স্পষ্ট। সেটা তখন বোঝা না গেলেও পরে বোঝা গিয়েছে।’ তাঁর নিশানায় যে ছিলেন বিজেপির রাজ্য নেতৃত্ব, তা একপ্রকার স্পষ্ট করে দিয়েছেন অনুপম হাজরা। এবার তাঁর বক্তব্যকে সমর্থন করলেন বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি তথাগত রায়।
অনুপম হাজরার বক্তব্যের সমর্থনে তথাগত ট্যুইটে লিখেছেন, ‘তৃণমূলের নেতাদের অতিরিক্ত গুরুত্ব দেওয়াতেই ভরাডুবি। দলের পুরোনো নেতাদের গুরুত্ব না দেওয়াটা ঠিক হয়নি।-বিজেপির কেন্দ্রীয় সচিব অনুপম হাজরা। বয়সে ছোট এবং অভিজ্ঞতায় সীমিত হলেও অনুপমের বিবৃতি প্রণিধানযোগ্য। এবার বিজেপি এমন লোককে টিকিট দিয়েছিল যিনি তা ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করেছেন (শিখা মিত্র)। তিনটে নগরীর নটী টিকিট পেয়ে মদনের সঙ্গে জলকেলি করেছে, তারপর হেরে গিয়ে ভ্যানিশ হয়ে গেছে। পৃথিবীর বৃহত্তম রাজনৈতিক দলের পক্ষে এর চেয়ে লজ্জার আর কী হতে পারে?’
বস্তুত দিলীপ ঘোষ-সহ বিজেপি নেতৃত্বের বিরুদ্ধে বারবার সুর চড়িয়েছেন তথাগত। সম্প্রতি বিজেপির নতুন জাতীয় কর্মসমিতিতে বিশেষ আমন্ত্রিতের তালিকায় জায়গা পেয়েছেন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। যে রাজীব কিনা প্রকাশ্যেই বিজেপি বিরোধিতা করছেন, প্রকাশ্যে যোগাযোগ রাখছেন তৃণমূল নেতাদের সঙ্গে। সেই বিষয়েও তথাগত রায় আক্রমণ শানিয়েছিলেন বিজেপির চার নেতার দিকেই।
রাজীবের অন্তর্ভূক্তি নিয়ে টুইটে তথাগত লিখেছিলেন, ‘রাজীব যখন তৃণমূলে ফেরার তোরজোড় চালাচ্ছেন, তখন তাঁর নাম রাখা হয়েছে বিজেপির জাতীয় একজিকিউটিভ কমিটিতে। রাজ্য কমিটিকে জানানোও হয়নি। কার সুপারিশে এমন হল? কী চলছে?’ বিধানসভা ভোটের পর থেকেই তথাগতর নিশানায় ছিলেন ‘কেডিএসএ’, অর্থাৎ কৈলাস বিজয়বর্গীয়, দিলীপ ঘোষ, অরবিন্দ মেনন ও শিবপ্রকাশ। এই চারজনকে নিয়ে অতীতেও বারংবার অভিযোগ করেছেন তথাগত রায়। দলবদলুদের দলে স্বাগত জানানোর জন্য এই চারজনকেই বরাবর কাঠগড়ায় তুলেছেন তিনি।