অবশেষে অপেক্ষার অবসান। বাবুলকে ধরে রাখতে পারল না পদ্মশিবির। তৃণমূলে আগেই যোগ দিয়েছিলেন তিনি। এবার সাংসদ পদে ইস্তফা দেওয়ার কাজটিও সেরে ফেললেন। এদিন বেলা ১১টা নাগাদ বাবুলকে সময় দিয়েছিলেন ওম বিড়লা। সেই মতো এদিন দিল্লীতে নিজেই গাড়ি চালিয়ে স্পিকারের বাড়িতে হাজির হন বাবুল। সেখানেই তিনি তাঁর সাংসদ পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার পত্র স্পিকারের হাতে তুলে দেন। যদিও সেই পদত্যাগ পত্র গৃহীত হয়েছে কী হয়নি তা নিয়ে লোকসভার সচিবালয় বা স্পিকারের তরফে কিছু জানানো হয়নি। তবে মনে করা হচ্ছে বাবুলের ইস্তফা গৃহীতই হবে। আর যদি তা হয়, তাহলে আসানসোল লোকসভা কেন্দ্রে উপনির্বাচনের লড়াই দেখা যাবে।
প্রসঙ্গত, এমনিতেই রাজ্যে আগামী ডিসেম্বর মাসে পুরনির্বাচন হতে পারে। মনে করা হচ্ছে সেই সময় আসানসোলের লোকসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনও করিয়ে ফেলতে পারে জাতীয় নির্বাচন কমিশন। তবে যদি সেই সময়ে নাও হয় সেই ভোট তবুও ২০২২ সালের এপ্রিলের মধ্যে সেই ভোট সেরে ফেলতেই হবে কমিশনকে। কেননা নিয়মানুযায়ী কোনও লোকসভা কেন্দ্রের আসন ফাঁকা হলে সেখানে ৬ মাসের মধ্যে উপনির্বাচন করাতে হয়। সেই হিসাবে এদিন থেকে ধরলে ২০২২ সালের এপ্রিল মাসের ১৬ তারিখের মধ্যেই সেই নির্বাচন সেরে ফেলতে হবে। বিজেপি কোনও ভাবেই চাইছিল না বাবুল তাঁর সাংসদ পদ থেকে ইস্তফা দিক। কেননা বিজেপির এখন আর সেই ক্ষমতা নেই, যে আসানসোলে উপনির্বাচন হলে সেই ভোটে আসন বার করে আনা। তাই তাঁরা বিষয়টি ঝুলিয়ে রাখতে চেয়েছিলেন। কিন্তু স্পিকার ওম বিড়লা সেই পথে হাঁটা দেননি। তিনি বাবুলকে এদিন সময় দিয়েছিলেন যাতে প্রাক্তন এই কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ইস্তফা দিতে পারেন।
উল্লেখ্য, এখন বাবুলকে ঘিরে নতুন করে জল্পনা ছড়িয়েছে তাঁরই করা একটিও টুইতে। সেখানে তিনি রীতিমতো ইঙ্গিত দিয়েছেন আসানসোলের উপনির্বাচনে তৃণমূলের হয়ে প্রার্থী হিসাবে লড়াই করার। যদি সেটাই হয় তাহলে বিজেপির কাছে তা আরও বড় ধাক্কা হয়ে দাঁড়াবে তা নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই। তবে এর পাশাপাশি বাবুলের ইস্তফায় এবার রীতিমত চাপে পড়ে গেলেন অধিকারী পরিবারের দুই সদস্য। শুভেন্দু অধিকারীর বাবা শিশির অধিকারী ও ভাই দিব্যেন্দু অধিকারী তৃণমূলের হয়ে ভোটে লড়াই করে এখন তাঁদের সঙ্গে যাবতীয় সম্পর্ক ছেদ করেছেন। তাই তৃণমূলের তরফেও ওই দুইজনের সাংসদ পদ বাতিল করার দাবি জানানো হয়েছে লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লার কাছে। সেই সূত্রে স্পিকার তাঁদের দুইজনকেই চিঠি পাঠিয়েছিলেন। এখন বাবুল ইস্তফা দেওয়ায় তৃণমূল কার্যত আরও জোর পেয়ে গেল ওই দুইজনের সাংসদ পদ বাতিলের জন্য সংসদে দাবি তোলার। একই সঙ্গে সুনীল মণ্ডলকেও বলা হতে পারে ইস্তফা দেওয়ার জন্য। এখন দেখার বিষয়, স্পিকার ওম বিড়লা এই ৩ জনকে নিয়ে কী সিদ্ধান্ত নেন। তবে সন্দেহ নেই বাবুলের ইস্তফায় এই ৩ জন তো বটেই, অনেকটাই চাপে পড়ল পদ্ম-নেতৃত্বও।