বিজয়া দশমীর দিন সন্ধেবেলা দেবী বিসর্জনের ঠিক আগে সিঁদুরখেলার সময় দীর্ঘদিনের বিশেষ বন্ধু বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়ের সিঁথি সিঁদুরে রাঙিয়ে দিয়েছেন প্রাক্তন মন্ত্রী তথা কলকাতার প্রাক্তন মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়। আর এভাবেই তিনি নিজেদের সম্পর্ককে বৈবাহিক সম্পর্ক হিসেবে সকলের কাছে প্রকাশ করলেন। শোভন চট্টোপাধ্যায়ের হাত থেকে সিঁদুর পরে আপ্লুত বৈশাখীদেবী নিজে ফেসবুক পোস্ট করে আনন্দের কথা জানিয়েছেন। তবে শোভনবাবুর এই পদক্ষেপের বিরুদ্ধে এবার কার্যত ক্ষোভ উগরে দিলেন তাঁর স্ত্রী রত্না চট্টোপাধ্যায়। মনে করিয়ে দিলেন যে এখনও আইনত শোভনবাবুর স্ত্রী তিনিই। অন্য কাউকে সিঁদুর পরালেই তিনি স্ত্রী হয়ে যান না।
প্রসঙ্গত, শুক্রবার সন্ধেবেলা সিঁদুরদান অধ্যায়ের পর শোভন চট্টোপাধ্যায়ের স্ত্রী রত্নাদেবীর প্রতিক্রিয়া নিয়ে উৎসাহ ছিল অনেকেরই। তবে ওইদিন তিনি মুখ খোলেননি। শনিবার তিনি নীরবতা ভাঙলেন। প্রতিক্রিয়ায় স্পষ্ট জানালেন, “হিন্দু বিবাহ আইন অনুযায়ী, এখনও আমিই শোভনের স্ত্রী। তাই ও অন্য কাউকে সিঁদুর পরাতে পারে না।” একরাশ ক্ষোভ উগরে তাঁর আরও বক্তব্য, “স্ত্রী থাকা সত্ত্বেও যদি কেউ অন্য মহিলার সঙ্গে বসবাস করে, তাহলে সেই মহিলাকে সমাজ রক্ষিতা বলে। আর রক্ষিতাকে সিঁদুর পরালেই সে স্ত্রী হয়ে যায় না।” যদিও শোভনবাবুর এই পদক্ষেপ নিয়ে আলাদা করে কোনও আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার কথা এখনও ভাবেননি রত্নাদেবী। এ বিষয়ে তিনি বললেন, “ওরা বিয়ের পরিকল্পনা করলে করুক, আমি দেখব কী করতে পারে।”
উল্লেখ্য, গত তিন বছর ধরে শোভন চট্টোপাধ্যায় এবং রত্না চট্টোপাধ্যায়ের বিবাহবিচ্ছেদের মামলা চলছে। রত্নাদেবী ডিভোর্সে একেবারেই নারাজ, সে কথা তিনি স্পষ্ট করে দিয়েছেন আগেই। অন্যদিকে, বৈশাখীদেবীও তাঁর স্বামী অধ্যাপক মনোজিৎ মণ্ডলের বিরুদ্ধেও ডিভোর্সের মামলা দায়ের করেছেন। ফলে দু’পক্ষেই বিবাহবিচ্ছেদের মামলা চলছে। তারই মধ্যে অবশ্য শোভনবাবু এবং বৈশাখীদেবী সংসার থেকে পৃথক হয়ে নিজেদের ঘরকন্না গুছিয়েছেন। কলকাতার প্রাক্তন মেয়র নিজের সমস্ত স্থাবর, অস্থাবর সম্পত্তি বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়ের নামে লিখে দিয়েছিলেন। বৈশাখীদেবীও গোলপার্কে শোভনের ফ্ল্যাট কিনে নিয়েছেন।