উত্তরপ্রদেশে লখিমপুর খেরি কাণ্ডে যোগী সরকারের ভূমিকায় রীতিমতো অসন্তোষ প্রকাশ করল সুপ্রিম কোর্ট। শীর্ষ আদালত পরিষ্কার জানিয়ে দিল, উত্তরপ্রদেশ সরকার এই ঘটনায় এখনও উপযুক্ত পদক্ষেপ নেয়নি। আদালত জানিয়েছে, এই ঘটনায় পুলিশ আর পাঁচটা সাধারণ ঘটনার মতোও সক্রিয়তা দেখায়নি উত্তরপ্রদেশের বিজেপিশাসিত সরকার। এক্ষেত্রে শুধু কথা হয়েছে, কিন্তু কাজ হয়নি কোনো।
প্রসঙ্গত, গত রবিবার লখিমপুর খেরিতে কৃষকদের বিক্ষোভ চলাকালীন গাড়ির চাকায় পিষ্ট হয়ে মৃত্যু হয় চার কৃষকের। মুহূর্তের মধ্যে রণক্ষেত্র হয়ে ওঠে এলাকা। পুলিশ গেলে পুলিশকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখান প্রতিবাদীরা। চলে গণপিটুনিও। সেই হিংসাত্মক পরিস্থিতির মাঝে পড়ে প্রাণ হারান আরও ৪ জন। এ ঘটনায় উত্তরপ্রদেশ সরকারের তদন্তের গতি অত্যন্ত মন্থর। এদিন শীর্ষ আদালতে রীতিমতো তিরস্কৃত হতে হয়েছে যোগী সরকারকে। মামলার শুনানিতে প্রধান বিচারপতি এন ভি রামানা মন্তব্য করেন, “সামগ্রিক ঘটনাটাই অত্যন্ত গুরুতর। উত্তরপ্রদেশ সরকার যে ভাবে পরিস্থিতির মোকাবিলা করেছে, তাতে আমরা একেবারেই সন্তুষ্ট নই।”
পাশাপাশি প্রধান বিচারপতি সাফ জানিয়েছেন, “৮ জনের মৃত্যুর ঘটনায় যোগী সরকার উপযুক্ত পদক্ষেপ করেনি। তদন্তের কাজ আদৌ সেভাবে এগোয়নি। অন্য ঘটনা হলে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে কাউকে গ্রেপ্তার করত। এক্ষেত্রে সেসব হয়নি।” আমাদের মনে হচ্ছে, শুধু কথাই হয়েছে, কাজের কাজ কিছু হয়নি। এই ঘটনায় যোগী সরকার যে সিট গঠন করেছে, তাতেও সন্তুষ্ট নয় শীর্ষ আদালত। প্রধান বিচারপতি বলছেন, “বিশেষ তদন্তকারী দল সম্বন্ধে আমরা জানি। ডিআইজি, পুলিশ সুপার, সার্কল অফিসার, সবাই স্থানীয়। স্থানীয়রা তদন্ত করলে এসবই হয়।” শুধু তাই নয়, এই ধরনের মামলায় সিবিআই তদন্ত যে অর্থহীন, তেমনও ইঙ্গিত দিয়েছে শীর্ষ আদালত।
উল্লেখ্য, এই ঘটনার মূল অভিযুক্ত কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী অজয় মিশ্র টেনির ছেলে আশিস মিশ্র মনু এখনও গ্রেপ্তার হননি। সেটা নিয়েও যথেষ্ট অসন্তুষ্ট সুপ্রিম কোর্ট। যোগী সরকার এ প্রসঙ্গে জানিয়েছে, জিজ্ঞাসাবাদের জন্য শুক্রবার মনুকে ডাকা হয়েছিল। তিনি হাজিরা দেননি। শনিবার ফের তাঁকে তলব করা হয়েছে। সেদিনও না এলে তাঁর বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার রাস্তা খোলা রয়েছে।