সোমবার সন্ধ্যায় জম্মু-কাশ্মীরের উরি সেক্টরে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা পেরিয়ে ভারতে ঢোকার চেষ্টা করে দুই পাকিস্তানি জঙ্গি। তখন নিরাপত্তারক্ষীদের গুলিতে একজন মারা যায়। আহত হয় আর একজন। তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গত কয়েকমাসে এই প্রথমবার কোনও পাকিস্তানি জঙ্গি ধরা পড়ল।
গত কয়েকদিনে উরি ও রামপুর সেক্টরে বেশ কয়েকটি অভিযান চালিয়েছে সেনা। বেশ কয়েকবার অনুপ্রবেশের চেষ্টা ব্যর্থ করে দেওয়া হয়েছে। কয়েকদিন আগে সীমান্ত পেরোতে গিয়ে তিন জঙ্গি সেনাবাহিনীর গুলিতে মারা পড়ে। তাদের কাছে অ্যাসল্ট রাইফেল ও গ্রেনেড সহ বিপুল পরিমাণ অস্ত্রশস্ত্র পাওয়া যায়।
গত রবিবার বড় ধরনের জঙ্গি হামলা হয়েছে পাকিস্তানের বালোচিস্তানেও। পাকিস্তানের জনক প্রয়াত মহম্মদ আলি জিন্নার মূর্তি বিস্ফোরণ ঘটিয়ে উড়িয়ে দিয়েছে বালোচ জঙ্গিরা। বালোচিস্তানের গোয়াদর প্রদেশে ঘটেছে এই বোমা হামলা।
রবিবার সন্ধ্যায় জিন্নার মূর্তির তলায় বিস্ফোরক মজুত করে রেখেছিল সন্ত্রাসবাদীরা, তা থেকেই বিস্ফোরণ ঘটে। গত জুনে তুলনামূলক নিরাপদ এলাকা বলে পরিচিত মেরিন ড্রাইভ এলাকায় বসানো মূর্তিটি বিস্ফোরণে চুরমার হয়ে গিয়েছে বলে জানিয়েছে প্রথম সারির পাকিস্তানি সংবাদপত্র দি ডন।
সর্বোচ্চ পর্যায়ে বিস্ফোরণের তদন্ত চলছে বলে জানিয়েছেন গোয়াদরের ডেপুটি কমিশনার অবসরপ্রাপ্ত মেজর আবদুল কবির খান। জঙ্গিরা পর্যটকের ছদ্মবেশে বিস্ফোরক রেখে গিয়েছিল বলে জানিয়েছেন তিনি। কমিশনার জানিয়েছেন, এখনও কেউ গ্রেফতার না হলেও দুএকদিনেই তদন্ত শেষ হয়ে যাবে। আমরা সব দৃষ্টিকোণ থেকে তদন্ত করছি, শীঘ্রই অপরাধীরা ধরা পড়বে, বলেন তিনি।
প্রসঙ্গত, ২০১৩ সালে জিয়ারাটে জিন্নার ব্যবহার করা ১২১ বছরের বাড়িতে গোলাগুলি চালিয়ে, বিস্ফোরণ ঘটিয়ে আগুন ধরিয়ে দিয়েছিল বালোচ সন্ত্রাসবাদীরা। চার ঘন্টার আগুনে বাড়ির দামী আসবাবপত্র, স্মারক-সব পুড়ে ছাই হয়। যক্ষ্মারোগে আক্রান্ত জিন্নার জীবনের শেষ কয়েকটি বছর কেটেছিল ওখানে। পরে বাড়িটি জাতীয় সৌধ ঘোষিত হয়।
বালোচিস্তানের প্রাক্তন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তথা বর্তমান সেনেটর সরফরাজ বুগতি ট্যুইট করেছেন, গোয়াদরে কায়েদ ই আজমের মূর্তি ভাঙা পাকিস্তানের দর্শনের ওপরই আঘাত। জিয়ারাটে কয়েদ-ই-আজমের বাসভবনের ওপর হামলার ক্ষেত্রে যেমনটা হয়েছে, সেভাবেই অপরাধীদের শাস্তি দেওয়ার দাবি করছি।