এতদিন বিজেপির ধর্মীয় রাজনীতির সাক্ষী ছিল উত্তরপ্রদেশ। সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পর অযোধ্যায় রামমন্দির তৈরির কাজ পুরোদমে শুরু হয়ে যাওয়ায় হিন্দুত্বের তাসও এখনও রীতিমতো জোরদার সেখানে। এরই মধ্যে লাগাতার মুসলিম সম্প্রদায় সম্পর্কে উস্কানিমূলক মন্তব্য করে ধর্মীয় সমীকরণ আরও তীব্রতর করতে চাইছেন মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। কিন্তু ধর্মের অঙ্ক সত্ত্বেও বিজেপি নেতৃত্ব মনে করছে, আগামী বিধানসভা নির্বাচনে শুধু ধর্মীয় মেরুকরণের অঙ্কে উত্তরপ্রদেশ দখলে রাখা কঠিন হবে। সেই কারণেই ভোটে জাতপাতের অঙ্ক কষতেও হিন্দি বলয়ের সবচেয়ে বড় রাজ্যটিকেই ল্যাবরেটরি হিসাবে ব্যবহার করতে চাইছে গেরুয়া শিবির।
দু’দিন আগেই যোগীরাজ্যে জেলে সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিত্বকারী দল নিশাদ পার্টির সঙ্গে হাত মিলিয়েছে বিজেপি। বিধানসভার ৪০৩ আসনের মধ্যে ওই দলের বিধায়ক মাত্র একজন। কিন্তু ১৬০টি বিধানসভা আসনে হার-জিত নির্ধারণে ওই ছোট্ট দলটিই বড় ভূমিকা নিতে পারে। এদিকে, আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি নিম্নবর্ণের মানুষের ভোট পেতে কতটা মরিয়া তা আরও স্পষ্ট হয়েছে রবিবারের মন্ত্রিসভা সম্প্রসারণে। সাংবিধানিক বিধান অনুযায়ী উত্তরপ্রদেশে ৬০ জন পর্যন্ত মন্ত্রী হতে পারেন। তাতে সাতটি মন্ত্রী পদ ফাঁকা ছিল। রবিবার যোগী আদিত্যনাথ একপ্রকার বিনা নোটিসেই সাতজনকে মন্ত্রী করেছেন। তাঁদের একজন জীতিন প্রসাদ ব্রাহ্মণ। কিন্তু বাকি ছয়জন নিম্নবর্গের—দলিত, পিছড়া এবং অতি পিছড়া সম্প্রদায়ভুক্ত।
উত্তরপ্রদেশে বিধানসভা নির্বাচন হওয়ার কথা আগামী বছর মার্চে। হিসাবমতো নতুন মন্ত্রীরা বড়জোর তিন মাস মন্ত্রী হিসাবে দায়িত্ব পালন করতে পারবেন। জানুয়ারির গোড়ায় সেখানে আদর্শ আচরণ বিধি জারি হয়ে যাবে। ফলে বোঝাই যাচ্ছে, ভোটের কথা মাথায় রেখে জাত-সমীকরণে নতুন মন্ত্রী বাছাই করেছেন যোগী। জাতপাতে বিরোধীদের কৌশল বুঝে নেওয়ার জন্যই একদিন সাতটি মন্ত্রী পদ ফাঁকা রেখেছিলেন তিনি। যোগীর কৌশল বুঝতে পেরে সোমবার সাত-সকালেই মুখ খুলেছেন বহুজন সমাজবাদী পার্টির সুপ্রিমো মায়াবতী। তাঁর বক্তব্য, জাতপাতের অঙ্ক মেনে ভোটের আগে মন্ত্রী করেছেন যোগী।