পাহাড়প্রমাণ লজ্জার সামনে দাঁড়াতে হল মোদী সরকারকে। করোনা পরিস্থিতি সংক্রান্ত সর্বাধিক ভুল তথ্য পরিবেশিত হয়েছে ভারতেই। ঠিক তারপরেই রয়েছে আমেরিকা। ব্রাজিল ও স্পেনের স্থান যথাক্রমে তৃতীয় এবং চতুর্থ। এমনই চাঞ্চল্যকর দাবি করেছে সাম্প্রতিক একটি গবেষণা। ভুল তথ্য পরিবেশনের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় ভূমিকা ইন্টারনেটের। তার বিভিন্ন ক্যাটিগরির মধ্যে শীর্ষে সোশ্যাল মিডিয়া। আবার সোশ্যাল মিডিয়ার মধ্যে ফেসবুক এব্যাপারে সর্বাধিক দায়ী। ২০২০ সালের ১লা জানুয়ারি থেকে ২০২১ সালের ৩০শে এপ্রিল সময়সীমার মধ্যে বিশ্বের ১৩৮টি দেশ থেকে সংগৃহীত কোভিড-১৯ সংক্রান্ত মোট ৯ হাজার ৬৫৭টি ভুয়ো খবর বিশ্লেষণ করে এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছেন গবেষকরা।
উল্লেখ্য, কানাডার ইউনিভার্সিটি অব আলবার্টার অধ্যাপক মহম্মদ সইদ আল জামান এই গবেষণার নেতৃত্বে ছিলেন। গত ২৭ আগস্ট একটি আন্তর্জাতিক স্তরের জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে ‘প্রিভ্যালেন্স অ্যান্ড সোর্স অ্যানালিসিস অব কোভিড-১৯ মিসইনফর্মেশন ইন ১৩৮ কান্ট্রিস’ শীর্ষক গবেষণাপত্রটি। অধ্যাপক জামান আমেরিকা ভিত্তিক একটি ‘ফ্যাক্ট-চেকিং’ সংস্থার মাধ্যমে ১৩৮টি দেশে এই সময়কালে প্রকাশিত কোভিড সংক্রান্ত ৯ হাজার ৬৫৭টি ভুল তথ্য সংগ্রহ করেন। দেখা যাচ্ছে, এর মধ্যে ১৫.৯৪ শতাংশ ভারত থেকে প্রকাশিত। পরবর্তী স্থানে রয়েছে যথাক্রমে আমেরিকা (৯.০৭ শতাংশ), ব্রাজিল (৮.৫৭ শতাংশ) এবং স্পেন (৮.০৩ শতাংশ)। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি অর্থাৎ ৯০.৫ শতাংশ ভুল বা বিভ্রান্তিমূলক তথ্য পরিবেশিত হয়েছে ইন্টারনেটের মাধ্যমে। তার মধ্যে আবার ৮৪.৯৪ শতাংশ ক্ষেত্রে দায়ী সোশ্যাল মিডিয়া। এ ব্যাপারে শীর্ষে ফেসবুক। ৬৬.৮৭ শতাংশ ভুল তথ্য ছড়ানো হয়েছে মার্ক জুকারবার্গের সংস্থার মাধ্যমে। সামাজিক মাধ্যমে এই ১৩৮টি দেশে যত ভুল তথ্য প্রকাশিত হয়েছে, তার ১৮.০৭ শতাংশই ভারতে। তাও অন্যান্য দেশগুলির তুলনায় এই হার সবচেয়ে বেশি।
এপ্রসঙ্গে গবেষকের দাবি, ভারতে তথ্য সরবরাহের পরিকাঠামো বেশ দুর্বল। মানুষজন ঢালাও ইন্টারনেট ও সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করলেও তথ্য সংক্রান্ত সচেতনতা এবং ‘ইনফর্মেশন (ডিজিটাল) লিটারেসি’ বেশ কম। ভুল ও বিভ্রান্তিমূলক তথ্যের বাড়াবাড়ি দেখা যাচ্ছে মূলত কোভিডের আগমনের সময়। কারণ, তখন এ সংক্রান্ত কোনও ডেটাবেস তৈরি ছিল না। তাঁর গবেষণা অবশ্য এও জানাচ্ছে, বিশ্বজুড়ে সর্বাধিক ভুয়ো তথ্য প্রকাশিত হয়েছে ২০২০ সালের মার্চে। তবে মে মাস থেকে কমতে শুরু করে তার হার।