সম্প্রতি কলকাতায় এসেছেন বিধায়ক কৃষ্ণ কল্যাণী। তৃণমূলে যোগ দেবেন কি না, জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন, ‘সময়ের অপেক্ষা।’ অর্থাৎ দলবদলের জল্পনা একেবারে উড়িয়ে দিচ্ছেন না তিনি। তবে ঠিক কবে যোগ দেবেন, তা জানাননি তিনি। বলেন, ‘এখনও কিছু ঠিক করিনি।’
জল্পনা তৈরি হয়েছিল বেশ কিছুদিন ধরেই। কলকাতায় এসে সেই জল্পনা আরও বাড়ালেন রায়গঞ্জের বিজেপি বিধায়ক কৃষ্ণ কল্যাণী। তাহলে কি তাঁর তৃণমূলে যোগ দিতে আর বেশি সময় বাকি নেই? দলবদল নিয়ে প্রশ্নের মুখে বিধায়কের জবাব ‘সময়ের অপেক্ষা।’ তবে ঠিক কবে, কোথায় তৃণমূলে যোগ দেবেন তিনি? সেই প্রশ্নের স্পষ্ট জবাব দিতে চাননি তিনি। সূত্রের খবর, তাঁর সঙ্গে উত্তরবঙ্গের আরও কয়েকজন বিধায়ক তৃণমূলে যোগ পারেন।
একসময় বিজেপি সাংসদ তথা প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী দেবশ্রী চৌধুরীর হাত ধরে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু রাজ্যে তৃণমূল ফের ক্ষমতায় আসার পরই সুর বদলাতে শুরু করে কৃষ্ণের। দলে সম্মান না পাওয়া থেকে শুরু করে, কাজ না করতে পারা। বিজেপি সাংসদ দেবশ্রী চৌধুরীর বিরুদ্ধে একের পর এক অভিযোগের বিস্ফোরণ ঘটাতে থাকেন কৃষ্ণ।
দিলীপ ঘোষ বলেছিলেন, ‘নবাগত বিধায়ক’ দলের নিয়ম কানুন জানেন না। বিজেপির উত্তর দিনাজপুর জেলা সভাপতি বাসুদেব সরকারের সঙ্গে রায়গঞ্জের দলীয় বিধায়ক কৃষ্ণ কল্যাণীর কোন্দলও প্রকাশ্যে আসে সম্প্রতি। কৃষ্ণ কল্যাণী সাংবাদিক সম্মেলন করে জানান, জেলা কমিটির কোনও দলীয় কর্মসূচিতে আর তিনি থাকবেন না।
তিনি অভিযোগ তোলেন, জেলা সভাপতি বাসুদেব সরকার ষড়যন্ত্র করছে তাঁর বিরুদ্ধে। বার বার দলীয় রাজ্য নেতৃত্বকে এই বিষয়ে জানানোর পরও কোনও লাভ হয়নি তাঁর। উল্টে বাসুদেব সরকার এখনও তাঁর বিরুদ্ধে কথা বলে চলেছেন বলে দাবি করেন কৃষ্ণ। একই সঙ্গে রায়গঞ্জের বিজেপি সাংসদ দেবশ্রী চৌধুরীর বিরুদ্ধেও সরব হন তিনি। তাঁর দাবি, রায়গঞ্জের মানুষ তাঁদের সাংসদকে এলাকাতেই পান না।
কিছুদিন আগে রায়গঞ্জের সুপার মার্কেট সংলগ্ন এলাকায় বিধায়ক কৃষ্ণ কল্যানীর দলীয় কার্যালয়ের বাইরের গেট ও সামনের পোস্টারে থাকা রায়গঞ্জের বিজেপি সাংসদ দেবশ্রী চৌধুরীর ছবি সাদা কাগজে ঢেকে দেওয়া হয়। এই দৃশ্য চোখে পড়তেই নতুন জল্পনা তৈরি হয় কর্মীদের মধ্যে। নির্বাচনের পর থেকেই সাংসদ ও জেলা নেতৃত্বের সঙ্গে বিধায়কের দূরত্ব নিয়ে জল্পনা ছিলই।
পরপর বেশ কয়েকটি কর্মসূচিতেও দেখা মিলছিল না জেলার দুই বিজেপি বিধায়কের। শেষ পর্যন্ত ফুল বদল করেন কালিয়াগঞ্জের বিধায়ক সৌমেন রায়। আর তার ঠিক পরদিনই জেলা নেতৃত্বের বিরুদ্ধে সুর চড়ান জেলার একমাত্র বিজেপি বিধায়ক রায়গঞ্জের কৃষ্ণ কল্যাণী। তাই রাজনৈতিক মহলের অনুমান, কৃষ্ণের ফুল বদলের আর বেশি দেরি নেই।