করোনার হানায় যখন ত্রস্ত গোটা দেশ। পুরোদমে মারণ ভাইরাসের তৃতীয় ঢেউয়ের আছড়ে পড়া সময়ের অপেক্ষামাত্র। তখন অজানা জ্বর ছড়াচ্ছে উত্তরপ্রদেশে। যোগী রাজ্যে চারিদিকেই কেবল রোগীর ঢল। কারোর ধুম জ্বর, কারোর আবার খিঁচুনি হচ্ছে। রোগীদের মধ্যে অধিকাংশই আবার শিশু।
প্রসঙ্গত, অজানা জ্বর ঘিরে গত কয়েক সপ্তাহ ধরে উত্তরপ্রদেশে যে আতঙ্ক ছড়িয়েছিল, তার তদন্তে নেমে কেন্দ্রীয় দল জানিয়েছে, অজানা জ্বর আসলে ডেঙ্গুই। রোগ চিহ্নিতকরণ হলেও চিকিৎসা নিয়ে সমস্যা রয়েই গিয়েছে, কারণ ডেঙ্গুর কবলে থাকা জেলাগুলিতে কোনও হাসপাতালেই আর ফাঁকা নেই বেড।
সারি সারি রোগী শুয়ে রয়েছে মেঝেতে, অধিকাংশই শিশু। হাসপাতালগুলিতে ফাঁকা নেই বেড। সন্তানদের সুস্থ করার আশায় পাগলের মতো ছোটাছুটি করছেন অভিভাবকরা। এমনই দৃশ্য ধরা পড়ছে ফিরোজাবাদ, আগ্রা-সহ উত্তরপ্রদেশের পূর্বাংশের একাধিক জায়গায়। দু-তিনদিনের জ্বরেই মৃত্যু হচ্ছে ছোট বাচ্চাদের।
গতকাল, অর্থাৎ ১৫ সেপ্টেম্বর অবধি ফিরোজাবাদের সরকারি হাসপাতালেই ভর্তি হয়েছেন ৪৫৮ জন রোগী। এরমধ্যে গত ২৪ ঘণ্টাতেই ২০৭ জন ভর্তি হয়েছেন। ১৬৩ জনের নমুনা পরীক্ষায় ডেঙ্গুর উপস্থিতি জানা গিয়েছে। এদিকে, হাসপাতালে বেশি শয্যা না থাকায়, যাদের সামর্থ্য রয়েছে, তারা রোগীদের আগ্রা নিয়ে যাচ্ছেন। বাকিরা হাসপাতালের বাইরেই বসে থাকছেন চিকিৎসার আশায়।
একই অবস্থা বেসরকারি হাসপাতালগুলিতেও। সেখানেও প্রতিটি ওয়ার্ডে জ্বরের রোগী ভর্তি। নতুন করে শয্যা এনেও হাসপাতালের করিডরেও চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। অন্যদিকে গ্রামবাসীদের অভিযোগ, রাজ্য প্রশাসনের তরফে মুখে আশ্বাস দেওয়া হলেও এখনও অবধি গ্রামে গ্রামে স্যানিটাইজেশন ও মশা দূর করার প্রক্রিয়া শুরু হয়নি। স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলিতেও প্রয়োজনীয় ওষুধ মিলছে না।
উল্লেখ্য, সবচেয়ে খারাপ অবস্থা যোগীরাজ্যের ফিরোজাবাদ জেলার। অজানা জ্বরে সবথেকে বেশি আক্রান্ত হয়েছেন সেখানকার বাসিন্দারাই। সেখানে এখনও অবধি ৬০ জনের মৃত্যু হয়েছে। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ডঃ দীনেশ কুমার জানান, মৃতদের মধ্যে পাঁচজনের ডেঙ্গুর কারণেই মৃত্যু হয়েছে। বাকিদের মৃত্যুর কারণ এখনও অস্পষ্ট।