কারোর কাছেই কোনও পাওনা ছিল না। অথচ আচমকাই ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ঢুকেছিল সাড়ে পাঁচ লক্ষ টাকা। অনেক ভাবনা-চিন্তার পর তিনি এই সিদ্ধান্তে এসেছিলেন যে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী নিজের প্রতিশ্রুতি মতো ওই টাকা পাঠিয়েছেন। তাই মনের সুখে সেই টাকা খরচও করে ফেলেছিলেন। তবে মাস পেরতেই গ্রামীণ ব্যাঙ্ক থেকে এই নোটিস আসতে শুরু করে যে, ভুল করে টাকা তাঁর অ্যাকাউন্টে চলে গিয়েছে, তিনি যেন টাকা ফেরত দিয়ে যান। তবে ওই ব্যক্তি সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, ‘প্রধানমন্ত্রী তাঁকে ওই টাকা দিয়েছেন, তিনি কেন টাকা ফেরত দেবেন?’
ঘটনাটি বিহারের। সেখানের খাগাড়িয়া জেলার বাসিন্দা রঞ্জিৎ দাসের অ্যাকাউন্টে চলতি বছরের মার্চ মাসেই সাড়ে পাঁচ লক্ষ টাকা ঢোকে। প্রথমে সেই টাকা ঢোকার মেসেজ দেখে চমকে গিয়েছিলেন তিনি। তবে গ্রামীণ ব্যাঙ্ক থেকে ওই টাকা এসেছে জানতে পেরে রহস্যের সমাধান করে নেন নিজেই। ২০১৪ সালের নির্বাচনী প্রতিশ্রুতিতে মোদী দেশের প্রত্যেক নাগরিকের অ্যাকাউন্টে ১৫ লক্ষ টাকা করে পাঠানোর যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, তা এতদিন বাদে তিনি পূরণ করেছেন বলেই ধরে নেন ওই ব্যক্তি। তিনি ভাবেন, ১৫ লক্ষ টাকার প্রথম কিস্তি হিসাবেই তাঁর অ্যাকাউন্টে সাড়ে পাঁচ লক্ষ টাকা পাঠানো হয়েছে।
এ দিকে, গ্রামীণ ব্যাঙ্ক বিপাকে পড়ে। যান্ত্রিক ত্রুটির কারণেই ভুল করে বক্তিয়ারপুরের ওই বাসিন্দার অ্যাকাউন্টে সাড়ে পাঁচ লক্ষ টাকা চলে যায়। টাকা ফেরত দেওয়ার জন্য একাধিকবার ওই ব্যক্তিকে নোটিস পাঠালেও তিনি কোনও জবাবই দেননি। শেষমেশ বাধ্য হয়ে পুলিশের দ্বারস্থ হন ব্যাঙ্কের আধিকারিকরা। এরপরই ব্যাঙ্কের অভিযোগের ভিত্তিতে রঞ্জিৎ দাসকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তবে থানায় গিয়ে ওই ব্যক্তিকে টাকা ফেরত দিতে বলা হলে তিনি জানান, সব টাকা তিনি খরচ করে ফেলেছেন।
জিজ্ঞাসাবাদে ওই ব্যক্তি বলেছেন, ‘চলতি বছরের মার্চ মাসে আমি যখন ওই টাকা পাই, তখন খুব খুশি হয়েছিলাম। প্রথমে কীসের টাকা এসেছে, বুঝতে না পারলেও পরে বুঝতে পারি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ওই টাকা দিয়েছেন। তিনি কথা দিয়েছিলেন যে সকলের অ্যাকাউন্টে ১৫ লক্ষ টাকা করে পাঠাবেন। আমি ভেবেছি, সেই টাকারই প্রথম কিস্তি পাঠিয়েছেন তিনি। পরেও আবার টাকা আসবে, এই আশাতেই আমি সমস্ত টাকা খরচ করে ফেলি। এখন আমার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে আর কোনও টাকা নেই।’