একুশের ভোটযুদ্ধে ভরাডুবির পর থেকেই গেরুয়া শিবিরের অন্দরে শুরু হয়ে গিয়েছে গোষ্ঠীকোন্দল, দোষারোপের পালা। নিত্যদিন ভাঙনও ধরছে দলে৷ দিকে দিকে বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিচ্ছেন নেতা-কর্মীরা। আর এর ফলে রাজ্যের বিভিন্ন জেলাগুলিতে পঞ্চায়েত ও পঞ্চায়েত সমিতিগুলিতেও ক্ষমতার সমীকরণ বদলে গিয়েছে বা বদলে যেতে বসেছে। এবার যেমন একের পর এক বিজেপি পরিচালিত গ্রাম পঞ্চায়েত নিজেদের হাতে নিয়ে তৃণমূলের বিজয় রথের গতি অব্যাহত রাখছে ঝাড়গ্রাম জেলার নয়াগ্ৰাম ব্লক তৃণমূল। বিধানসভা ভোটের আগে পর্যন্ত যেখানে নয়াগ্ৰাম ব্লকের ১২ টি গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যে ১০ টি তৃণমূলের দখলে ছিল। সেখানে বাকি থাকা ২ টি গ্রাম পঞ্চায়েতের দখল নিয়ে সোমবার একপ্রকার গ্রাম পঞ্চায়েত দখলের বিজয় অভিযান শেষ করল তৃণমূল। বিধানসভা নির্বাচনের পর বিজেপি পরিচালিত বালিগেড়িয়া গ্রাম পঞ্চায়েত দখল নেওয়ার পর সর্বশেষ সংযোজন হল আড়রা অঞ্চল।
এই দুটি অঞ্চলই গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে ক্ষমতা দখল করেছিল বিজেপি। কিন্তু পরবর্তী সময়ে বিজেপির নির্বাচিত পঞ্চায়েত সদস্যরা ব্লক তৃণমূলের সভাপতি শ্রীজীব সুন্দর দাসের নেতৃত্বে তৃণমূলে যোগ দিতে বালিগেড়িয়া অঞ্চল আগেই শাসক দলের হাতে এসেছিল। এবার বিজেপি পরিচালিত আড়রা গ্রাম পঞ্চায়েতের উপ প্রধান বিজয়া ধয়াল এবং পঞ্চায়েত সদস্য নরেন্দ্রনাথ টুডু তৃণমূলে যোগদান করার ফলে ১১ সদস্য বিশিষ্ট আড়রা গ্রাম পঞ্চায়েতের ক্ষমতা একপ্রকার তৃণমূলের হাতে আসতে চলেছে। তৃণমূলের ঝাড়গ্ৰাম জেলা সভাপতি দেবনাথ হাঁসদার সবুজ সংকেত পাওয়ার পর আড়রা গ্রাম পঞ্চায়েতের উপ প্রধান এবং বিজেপি পঞ্চায়েত সদস্য তৃণমূলে যোগদান করেন তৃণমূলের ঝাড়গ্রাম জেলাকমিটির নেতা উজ্জ্বল দত্ত এবং ব্লক তৃণমূলের সভাপতি শ্রীজীব সুন্দর দাস এর হাত ধরে।
এ নিয়ে উজ্জ্বল দত্ত বলেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে যোগ দিতে ব্লকের একাধিক বিজেপির পঞ্চায়েত সদস্য তৃণমূলে যোগদান করছেন যার মাধ্যমে গ্রাম পঞ্চায়েতগুলি তৃণমূলের দখলে আসছে। পরবর্তী সময়ে আড়রা অঞ্চলে তৃণমূলের পঞ্চায়েত বোর্ডকে নিষ্কণ্টক করতে ফের বিজেপির নয়াগ্ৰাম মন্ডলের এসটি মোর্চার সভাপতি শঙ্কর হেমব্রম এর নেতৃত্বে বেশ কয়েকজন নেতৃত্ব স্থানীয় ব্যক্তি তৃণমূলে যোগদান করেন। এদিনের যোগদান কর্মসূচীতে ছিলেন বিধায়ক দুলাল মুর্মু, শ্রীজীব সুন্দর দাস,পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি সঞ্চিতা ঘোষ প্রমুখ। যোগদান কর্মসূচীতে এসে বিধায়ক দুলাল মুর্মু স্থানীয় তৃণমূল নেতাকর্মীদের আশ্বাস দেন প্রয়োজন অনুযায়ী সবসময় তিনি এলাকার উন্নয়নে মানুষের পাশে থাকবেন। যার ফলে নয়াগ্রাম ব্লকে বিজেপি আর কোন গ্রাম পঞ্চায়েতের ক্ষমতায় থাকলো না। ১২টি গ্রাম পঞ্চায়েতের ক্ষমতায় চলে এল শাসক দলের হাতে।