সাম্প্রতিককালে বারবারই বির্তকের শিরোনামে উঠে এসেছে উত্তরপ্রদেশ পুলিশ। হাথরস কান্ড থেকে শুরু করে একাধিক ইস্যুতে সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছে তাদের। এরই মধ্যে দুই মাস ধরে তদন্ত করেও ১৩ বছরের কিশোরীকে উদ্ধার করতে না পারায় নতুন করে মুখ পুড়িয়েছে তারা। শেষে বাধ্য হয়ে আদালত উত্তরপ্রদেশ পুলিশের হাত থেকে তদন্তভার কেড়ে নিয়ে দিল্লী পুলিশকে ভার দিয়েছিল। ফলস্বরূপ দু’মাসেও যে কিশোরীর খোঁজ পায়নি যোগীর পুলিশ, তদন্তভার হাতে নিয়ে তাঁকে দু’দিনেই খুঁজে বের করলেন তারা। আর এই ঘটনাতেই উত্তরপ্রদেশ পুলিশের তুমুল সমালোচনা করল সুপ্রিম কোর্ট।
গত ৮ জুলাই উত্তর প্রদেশের গোরক্ষপুর থেকে নিখোঁজ হয়ে যায় ১৩ বছরের এক কিশোরী। পুলিশে অভিযোগ জানিয়ে দু’মাস অপেক্ষা করেও মেয়ের কোনও খোঁজ না পাওয়ায় বাধ্য হয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন ওই কিশোরীর মা। লিখিত আর্জিতে ওই মহিলা জানিয়েছিলেন, তাঁর পরিচিত একজনই মেয়েকে অপহরণ করেছে বলে সন্দেহ। সম্প্রতিই পরিবারের বাকি সদস্যদের সঙ্গে একটি বিয়েবাড়িতে গিয়েছিলেন, সেই সময়ই ওই ব্যক্তির সঙ্গে পরিচয় হয় এবং তাঁর আচরণ দেখে সন্দেহ জাগে। পুলিশকে তদন্তের গতিপ্রকৃতি সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলে তারা জানান, তল্লাশি জারি রয়েছে। ওই কিশোরীকে খুঁজে বের করার জন্য যেন আরও দুই মাস সময় দেওয়া হয়। এতেই ক্ষুব্ধ হয়ে দিল্লী পুলিশের হাতে ওই মামলার তদন্তভার তুলে দেয় শীর্ষ আদালত।
গত বুধবারই দিল্লী পুলিশের হাতে তদন্তভার তুলে দেওয়া হয়। আর দায়িত্ব হাতে পাওয়ার পরদিন, অর্থাৎ বৃহস্পতিবার উত্তরপ্রদেশ পুলিশ দিল্লী পুলিশের হাতে গোটা তদন্তের রেকর্ড তুলে দেওয়া হয়। সেই রিপোর্ট যাচাই করার পরই দিল্লী পুলিশের এক দল কলকাতায় আসে। ওই কিশোরীকে উদ্ধারের পাশাপাশি তাঁর অপহরণকারীকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলেও জানা গিয়েছে। শুক্রবার শীর্ষ আদালতে ওই কিশোরীকে পেশ করে দিল্লী পুলিশ। বিচারপতি এএম খানউইলকর, বিচারপতি ঋষিকেশ রায় ও বিচারপতি সিটি রবিকুমারের বেঞ্চ যাবতীয় কার্যপ্রণালী শেষ করার পর ওই কিশোরীকে তাঁর মায়ের হাতে তুলে দেওয়ার নির্দেশ দেয় আদালত।
একইসঙ্গে উত্তরপ্রদেশ পুলিশের তুমুল সমালোচনা করে বিচারপতিরা বলেন, ‘উত্তরপ্রদেশ পুলিশের কী হাল, তা এই তদন্ত দেখেই আন্দাজ করা যাচ্ছে। তারা তদন্তের জন্য বেশিদূর যেতেই চায়নি। বিষয়টি কতটা গুরুতর তা বুঝতে না চেয়েই দু’মাস সময় কাটানোর পরও অতিরিক্ত দু’মাস সময় চেয়েছিল মেয়েটিকে খুঁজে বের করার জন্য।’ ওই মহিলা উত্তরপ্রদেশ পুলিশকে সন্দেহভাজন ব্যক্তি সম্পর্কে জানালেও কেন তারা ওই ব্যক্তির খোঁজ করার চেষ্টা করেননি, তা নিয়েও শীর্ষ আদালত প্রশ্ন তোলে।