দেশজুড়ে কোভিড অতিমারী আবহের মধ্যেই উত্তরপ্রদেশের পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলিতে ব্যাপক হারে ছড়িয়ে পড়েছে ডেঙ্গু। ওই রোগের সংক্রমণ সবচেয়ে বেশি হয়েছে ফিরোজাবাদ জেলায়। গত ১০ দিনে সেখানে ৪০ টি শিশু সহ ৫০ জন ডেঙ্গুতে মারা গিয়েছেন। সে রাজ্য সরকার জানিয়েছে ডেঙ্গু হ্যামারেজিক ফিভারে ৫০ জনের মৃত্যু হয়েছে। ডেঙ্গু রোগ গুরুতর রূপ ধারণ করলে তাকে ডেঙ্গু হ্যামারেজিক ফিভার বলা হয়। পশ্চিম উত্তরপ্রদেশের অপর যে জেলাগুলিতে ডেঙ্গু বেশি ছড়িয়েছে, তার মধ্যে আছে মথুরা ও আগ্রা। সেখানে হাসপাতালগুলিতে জ্বর ও ডিহাইড্রেশন নিয়ে ভর্তি হয়েছে বহু শিশু। ফিরোজাবাদের জেলাশাসক চন্দ্রবিজয় সিং বলেন, হু-এর একটি টিম তাঁকে জানিয়েছে, হ্যামারেজিক ডেঙ্গু হল ডেঙ্গু রোগের একটি মারাত্মক রূপ। এক্ষেত্রে শিশুদের রক্তের প্লেটলেট কাউন্ট আচমকা কমে যায়। ব্যাপক রক্তপাত ঘটে। ফিরোজাবাদের মেডিক্যাল অফিসারদের সাহায্য করার জন্য কেন্দ্রীয় সরকার ন্যাশনাল সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল এবং ন্যাশনাল ভেক্টর বর্ন ডিজিজ কন্ট্রোল প্রোগ্রামের বিশেষজ্ঞদের পাঠানো হয়েছে।
উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার ফিরোজাবাদে যে পাঁচজন ডেঙ্গুতে মারা গিয়েছে তাদের মধ্যে আছে ছ’বছর বয়সী পল্লবী। তাকে জেলা হাসপালালে ভর্তি করা হয়েছিল। ১০০ বেডের ওই হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগীদের চিকিৎসা চলছে। মঙ্গলবার পল্লবীকে সেখানে ভর্তি করা হয়। একটি ভিসুয়ালে দেখা যায়, হাসপাতালের বাইরে তার মা কাঁদছেন। তাঁর অভিযোগ, ডাক্তারদের গাফিলতিতেই পল্লবী মারা গিয়েছে। ফিরোজাবাদ থেকে ৬০ কিলোমিটার দূরে মথুরায় কোহ নামে একটি গ্রামে ১১ টি শিশু জ্বর ও ডিহাইড্রেশনে মারা গিয়েছে। সরকার জানিয়েছে, তাদের ডেঙ্গু হয়েছিল। ওই জেলায় ডেঙ্গুতে মারা গিয়েছেন ১৫ জন। একটি ভিসুয়ালে দেখা গিয়েছে, দিল্লীথেকে ১০০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত হাপুরের হাসপাতালে শিশুবিভাগে বিরাট ভিড় হয়েছে। বহু শিশু এসেছে তাদের মায়ের সঙ্গে। প্রসঙ্গত, যোগীরাজ্যে স্বাস্থ্যব্যবস্থার এমন বেহাল দশা নতুন নয়। করোনার প্রকোপের সময়ও সে রাজ্যের স্বাস্থ্যব্যবস্থার গাফিলতি প্রকাশ্যে এসেছিল। ডেঙ্গু সংক্রমণে এতজনের মৃত্যুর জন্য সরকারের কড়া সমালোচনা করেছেন কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়ঙ্কা গান্ধী বঢরা। তিনি টুইট করে বলেন, সারা রাজ্যে ডেঙ্গুতে মারা গিয়েছেন ১০০ জন। তাঁর কথায়, “কোভিডের দ্বিতীয় ওয়েভ থেকে রাজ্য সরকার কি কিছুই শেখেনি? ডেঙ্গু যাতে আরও ছড়িয়ে না পড়তে পারে সেজন্য পূর্ণ শক্তি নিয়োগ করতে হবে রাজ্য সরকারকে।”