বিজেপি শাসিত হরিয়ানায় প্রতিবাদী কৃষকদের ওপরে পুলিশের লাঠিচার্জকে ঘিরে শনিবার উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল কৃষক আন্দোলনের মঞ্চ। আজ মারা গিয়েছেন সেদিন হরিয়ানায় পুলিশের লাঠিচার্জের ফলে আক্রান্ত এক আন্দোলনকারী কৃষক। এই পরিস্থিতিতেই এবার শনিবার হরিয়ানায় কৃষকদের ওপরে লাঠিচালনার ঘটনাকে ‘দ্বিতীয় জালিয়ানওয়ালাবাগ’ হিসাবে চিহ্নিত করল শিবসেনা। তাঁদের মুখপত্র ‘সামনা’-য় লেখা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী যখন অমৃতসরে জালিয়ানওয়ালাবাগ কমপ্লেক্স উদ্বোধন করছিলেন, তখনই হরিয়ানায় দ্বিতীয় জালিয়ানওয়ালাবাগ ঘটেছিল। পত্রিকার সম্পাদকীয়তে বলা হয়েছে, ‘সরকার যে ঘৃণার বীজ বপন করছে, তার ফল তিক্ত হতে বাধ্য। মনোহরলাল খট্টর সরকারের আর ক্ষমতায় থাকার অধিকার নেই।’
প্রসঙ্গত, গত ন’মাস ধরে কয়েক হাজার কৃষক দিল্লী সীমান্ত অবরোধ করে আছেন কৃষি আইন প্রত্যাহারের দাবিতে। এরই মধ্যে হরিয়ানার বিজেপি প্রধান ও পি ধনকরের কনভয় থামাতে চেষ্টা করেছিলেন কৃষি আইনের বিরুদ্ধে আন্দোলনরত কৃষকরা। পুলিশ তাঁদের ওপরে লাঠিচার্জ করে। এরপর ক্রুদ্ধ কৃষকরা হরিয়ানার বেশ কয়েকটি রাস্তা অবরোধ করেন। কুরুক্ষেত্র, দিল্লি-অমৃতসর হাইওয়ে, এবং আম্বালার পথে শম্ভু টোল প্লাজা পর্যন্ত অঞ্চল বিরাট যানজটের কবলে পড়ে। একটি ভিডিও ক্লিপে দেখা যায়, রাস্তার ওপরে খাটিয়া পেতে বসে আছেন কৃষকরা। এদিকে তিন কিলোমিটার জুড়ে দাঁড়িয়ে আছে গাড়ি, বাস এবং ট্রাক। অপর একটি ক্লিপে দেখা যায়, হেলমেট পরা দুই পুলিশকর্মী এক ব্যক্তির সঙ্গে তর্ক করছেন। সেই ব্যক্তিকে দেখে মনে হচ্ছে, তিনি গুরুতর আহত। তাঁর জামায় লেগে রয়েছে রক্ত। মাথায় ব্যান্ডেজ বাঁধা রয়েছে।
তৃতীয় একটি ভিডিয়োয় দেখা যায়, বড় সংখ্যক পুলিশ হেলমেট পরে দাঁড়িয়ে আছে। জানা গিয়েছে, কারনাল অঞ্চলে পুলিশ লাঠিচার্জ করে কৃষকদের ওপর। এদিক পুলিশ সাফাই দিয়েছে, কৃষকরা লাঠি দিয়ে বিজেপির রাজ্য প্রধানের গাড়িতে আঘাত করেন। ওই এলাকা থেকে ৩০ কিলোমিটার দূরে বিজেপির বৈঠক হওয়ার কথা ছিল। কৃষকরা মিছিল করে সেদিকে এগোনোর চেষ্টা করলে পুলিশ লাঠিচার্জ করে। কৃষকনেতা গুরনাম সিং চাদুনি জানিয়েছেন, হাসপাতালে চিকিৎসা চলাকালীন হার্ট অ্যাটাক হয়ে মৃত্যু হয়েছে প্রহৃত কৃষক সুশীল কাজলের। কৃষকনেতা টুইটে লেখেন, ‘হাফ একর জমির মালিক সুশীল কাজল কৃষক আন্দোলনের অংশ ছিলেন গত ৯ মাস ধরে। গতকাল কার্নাল টোলপ্লাজায় পুলিশের লাঠির মুখে গুরুতর আহত হন তিনি। এর পরে হার্ট অ্যাটাকে মারা যান। কৃষক সম্প্রদায় তাঁর এই আত্মত্যাগ ভুলবে না।’