একুশের ভোটযুদ্ধে বিজেপিকে রুখে দিয়ে রাজ্যে তৃতীয়বারের জন্য ক্ষমতায় এসেছে তৃণমূল। আর তারপরেই ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের দিকে তাকিয়ে শুরু হয়েছে অন্যান্য রাজ্যের সংগঠন বৃদ্ধির চেষ্টা। ত্রিপুরায় বিধানসভা নির্বাচন রয়েছে ২০২৩ সালে। আর সেই ভোটকে ‘পাখির চোখ’ করেই বিপ্লব দেবের রাজ্যে সংগঠন তৈরি এবং প্রসারে নজর দিয়েছে দল। ইতিমধ্যেই সিপিএম, কংগ্রেস এমনকী বিজেপি ছেড়েও অনেকে দলে যোগ দিতে ইচ্ছুক, গত কয়েকদিন ধরে এমনই দাবি করছে ত্রিপুরা তৃণমূলের শীর্ষ নেতারা। খোদ তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দোপাধ্যায় জানিয়েছেন জিতেন সরকার যোগাযোগ রাখছেন তৃণমূলের সঙ্গে৷ এর পরেই জোর চর্চা শুরু হয়েছে ত্রিপুরায়৷ সত্যিই কি জিতেন সরকার যোগ দিচ্ছেন তৃণমূলে?
সম্ভাবনার কথা উড়িয়ে দিচ্ছেন না দীর্ঘ দিনের রাজনীতিবিদ জিতেন নিজেও। আর বিমানবন্দরে নামলে তৃণমূল নেতাদের ওপর তালিবানি কায়দায় আক্রমণ বা গাড়ি ভাঙচুর বা হোটেলে থাকতে না দেওয়ার সিদ্ধান্তও তিনি মেনে নিতে পারছেন না। জিতেন জানিয়েছেন, ‘এই সব আচরণের নিন্দা মানুষই করবে৷ মানুষ এই সব ভালো চোখে দেখে না। যে বা যারা এই সব করছেন তাদের অবিলম্বে বিরত হওয়া উচিত।’ তাঁর কথায়, ‘বামেরাও একটা সময় কিছু কিছু ক্ষেত্রে এমন আচরণ করেছিল। মানুষ মেনে নেয়নি। বিজেপিকেও বুঝতে হবে সুযোগ পেলে নিজেকে রক্ষা করতে সবাই প্রতিরোধ গড়ে তুলবে৷ তবে সেটা গণ প্রতিরোধ হলেই মুশকিল হবে।’
তিনি এ-ও বলেন, ‘দলকে অনেকবার বলেছি এমনটা না করতে। আমি মুখ্যমন্ত্রীকে বলেছি। আমি রাজ্য সভাপতিকে বলেছি৷ দীর্ঘদিনের রুলিং পার্টিকে মানুষ কিন্তু এই কারণেই হারিয়ে দিল। প্রাণ রক্ষার জন্যে দেওয়ালে পিঠ ঠেকে গেলে মানুষ ভয়ংকর হয়ে যায়৷ এই সব গুন্ডামি করলে, মানুষ পথে নামবে। সিপিএম যা করত, বিজেপি এখন তা শুরু করেছে। এটা একদম ঠিক নয়।’ দলের প্রতি তার এই বক্তব্যে অনেকেই মনে করছে তিনি বিজেপিতে থেকে তিতিবিরক্ত৷ অন্যদিকে, জিতেনের দলবদলের জল্পনা আরও বাড়িয়ে দিয়েছে স্বয়ং তৃণমূল নেত্রীর মন্তব্য। বুধবার নবান্নের সাংবাদিক বৈঠকে তিনি বলেন, ত্রিপুরার প্রাক্তন অধ্যক্ষ এবং পাঁচ বারের বিধায়ক জিতেন সরকার তাঁর বেশ কিছু অনুগামীকে নিয়ে তৃণমূলে যোগ দিতে চেয়ে তাঁকে চিঠি দিয়েছেন৷ তবে প্রায় ৬০ বছর ধরে ত্রিপুরার রাজনীতির সাথে যুক্ত জিতেন এবার ‘পরিবর্তন’-এর পক্ষে সওয়াল করেন কিনা সেটাই এখন দেখার৷