বিজেপির খেলা শেষ। মমতার-খেলা হবে। রসিক মহল বলছে রাজনীতির ময়দানে এ যেন অনেকটা তোমার হল শুরু আমার হল সারা-র মতো। রাজ্য রাজনীতির কারবারিদের কাছে তাৎপর্যপূর্নও বটে।
১৬ অগাস্ট মমতার খেলা হবে ঘোষনার ঠিক দুদিন পর, তৃণমূলের পাল্টা হিসাবে বিজেপি ৯ থেকে ১৬ অগাস্টের কর্মসূচি ঘোষনা করে। সেই সূচিতে ১২ অগাস্ট বরাদ্দ ছিল খেলা হবে জনসংযোগ কর্মসূচি। যদিও, পরে বাগনান ধর্ষণ কাণ্ডের জেরে ১৩ অগাস্ট লা মোর্চার কর্মসূচিকে অগ্রাধিকার দিয়ে, দিন বদল করে ১৩ ই অগাস্ট কর্মসূচি করে বিজেপি। বিজেপির দাবি, রাজ্যে মোট ৫ হাজার ৪২৩ টি জায়গায় কবাডি, ফুটবল টুর্নামেন্ট অনুষ্ঠিত হয়েছে। সায়ন্তন বসু, রাজু বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো নেতারাও মাঠে নেমেছেন।
১৬ অগাস্ট মমতার খেলা হবে কর্মসূচি ঘোষনার পরেই তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বিজেপি দাবি করেছিল, ১৬ অগাস্ট বাংলা ও বাঙালির কাছে ঋন শোধের দিন। ধর্মের ভিত্তিতে দেশভাগ ও রাজ্যভাগের স্বীকৃতি দেওয়ায়, একটি বিশেষ সম্প্রদায়ের হাতে বাঙালি হিন্দুদের চরম হিংসার শিকার হতে হয়েছিল। সেই ইতিহাস মনে রেখে এবং নতুন প্রজন্মকে জানানোর জন্য বিজেপি এই দিনটি পশ্চিমবঙ্গ বাঁচাও, বাংলা বাঁচাও দিবস হিসাবে পালন করে। আর, রাজ্যের বর্তমান সরকার ওই বিশেষ সম্প্রদায়কে বার্তা দিতেই ১৬ অগাস্টের হিংসাকে ভুলিয়ে দিতে চাইছে। সে জন্য খেলা হবে কর্মসূচির জন্য এই দিনটিকেই বেছে নিয়েছেন মমতা।
রাজনৈতিক মহলের মতে, এটা ঠিক, স্বাধীনতার পর থেকেই, ১৬ ই আগস্ট বিজেপি ও সংঘ পরিবার বকলমে বিশ্ব হিন্দু পরিষদ, হিন্দু সংহতি-র মত সংঘ পরিবারের শাখা প্রশাখাকে দিয়ে রাজ্যে এই দিনটি পালন করে। কিন্তু, এতদিন সেই প্রচার, কর্মসূচির বিশেষ কোনও রাজনৈতিক তাৎপর্য ছিল না। ২১ এর ভোটে রাজ্য চূড়ান্ত মেরুকরণ করে, মমতার কাছে হেরে গিয়েও সেই মেরুকরণের রাজনীতি থেকে সরতে পারছে না বিজেপি। তাই এবার, যে এই দিনটি নিয়ে তারা ডালপালা মেলবে, সেই পরিকল্পনা আগে ভাগেই টের পেয়ে যান মমতা। ফলে, ১৬ আগস্ট নিয়ে মাঠে নামার আগেই মমতার মাষ্টার স্ট্রোকে বল গ্যালারি ছাড়িয়ে মাঠের বাইরে।