যোগীর আমলে ‘ট্রিগার হ্যাপি’ হয়ে উঠেছে উত্তরপ্রদেশ পুলিশ— বারবারই এই অভিযোগ উঠেছে। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অমান্য করেই গত ৪ বছরে হু হু করে বেড়েছে যোগী রাজ্যে এনকাউন্টারের সংখ্যা। উত্তরপ্রদেশের পুলিশ রিপোর্ট সেই কথাই বলছে। ২০১৭ সালের মার্চ থেকে ২০২১ সালের মার্চ পর্যন্তই রাজ্যে সরকারি হিসেবে এনকাউন্টারের সংখ্যা ৮৪৭২টি। এর মধ্যে ৩৩০২ অপরাধী আহত হয়েছে। মারা গিয়েছে ১৪৬ জন। উল্লেখ্য, ২০১৭ সাল থেকেই এই রাজ্যে ক্ষমতায় এসেছে বিজেপি।
যদিও রাজ্যের সিনিয়র পুলিশকর্তা জানিয়েছেন, কোনও বিশেষ স্ট্র্যাটেজি নিয়ে যে এত এনকাউন্টার করা হয়েছে এ কথা ঠিক নয়। বরং পুলিশের কথায়, এই একই সময়কালে ১৮ হাজার ২২৫ জন অপরাধী ধরা পড়েছে, যাদের ধরতে গিয়ে ১৩ জন পুলিশ নিহত হয়েছেন এবং ১১৫৭ জন জখম হয়েছেন। তবে বেসরকারি সূত্র বলছে, উত্তরপ্রদেশ পুলিশ গত কয়েক বছর ধরেই নিঃশব্দে চালাচ্ছে ‘অপারেশন ল্যাংড়া’। দুষ্কৃতীদের পায়ে গুলি করে জখম করাই এই অপারেশনের লক্ষ্য। তা করতে গিয়েই এত এনকাউন্টার, এত মৃত্যু। যদিও এনকাউন্টারের পরে কতজন দুষ্কৃতী ‘ল্যাংড়া’ হয়ে বেঁচে রয়েছেন, তার কোনও তথ্য পুলিশের কাছে নেই।
জানা গিয়েছে, চলতি মাসেই এই এনকাউন্টারগুলি নথিভুক্ত হয়েছে সরকারি ভাবে। এর বাইরে আরও কত যে এমন ‘অপারেশন ল্যাংড়া’ হয়েছে, তার সঠিক তথ্য পুলিশের কাছেও নেই। প্রসঙ্গত, বিগত ২০১৯ সালের জানুয়ারি মাসে এই ধরনের এনকাউন্টার ও হত্যা নিয়ে গুরুত্ব দিয়ে ভাবার কথা ঘোষণা করেছিল সুপ্রিম কোর্ট। বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলিও এনকাউন্টারের বিপক্ষে সুর চড়িয়েছিল। কিন্তু তার পরেও দেখা যায়, যোগী সরকার রাজ্যের এনকাউন্টারগুলিকে সাফল্য হিসেবে বর্ণনা করছে। এমনকী প্রকাশ্যে বহুবার যোগীকে হুমকি দিতে শোনা গেছে, ‘অপরাধীদের মারতে পুলিশ দ্বিধা করবে না’। ফলে উত্তরপ্রদেশের এনকাউন্টার-তালিকা ছোট হওয়ার সম্ভাবনা দেখছে না কোনও মহলই।