করোনা ভ্যাকসিন নিয়ে ক্লিনিকাল ট্রায়ালের সময় কী কী তথ্য পাওয়া গিয়েছিল, একথা জানার জন্য জনস্বার্থের মামলা হয়েছিল সুপ্রিম কোর্টে। সোমবার শীর্ষ আদালত ওই মামলার ভিত্তিতে নোটিশ দিল কেন্দ্রীয় সরকারকে। ভ্যাকসিন নিয়ে ক্লিনিকাল ট্রায়ালের ভিত্তিতে তা জরুরি পরিস্থিতিতে ভারতে ব্যবহার করার ছাড়পত্র দেওয়া হয়। ছাড়পত্র দেওয়ার আগে ক্লিনিকাল ট্রায়ালে ঠিক কী জানা গিয়েছিল, তা জানার জন্য মামলা করেছিলেন ন্যাশনাল টেকনিক্যাল অ্যাডভাইসারি গ্রুপ অন ইমিউনাইজেশন এর প্রাক্তন সদস্য জ্যাকব পুলিয়েল। প্রসঙ্গত, অ্যাডভোকেট প্রশান্ত ভূষণের মাধ্যমে ওই মামলা দায়ের করা হয়। আবেদনকারী জানিতে চেয়েছিলেন, ভ্যাকসিন নেওয়ার পরে কতজন কোভিডে আক্রান্ত হয়েছেন? তাঁদের মধ্যে কতজনকে হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়েছে? কতজন মারা গিয়েছেন? একইসঙ্গে প্রশ্ন তোলা হয়েছে, কয়েকটি ক্ষেত্রে ভ্যাকসিন নেওয়া যে বাধ্যতামূলক করা হয়েছে, তা কতদূর ন্যায়সঙ্গত।
উল্লেখ্য, পরিস্থিতি এমন দাঁড়িয়েছে যে, ভ্যাকসিন না নিলে অনেকে জীবিকা হারাতে পারেন। সুপ্রিম কোর্টে আবেদনে বলা হয়েছে, “ভারতে যেভাবে ভ্যাকসিনে ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে, তাতে আশঙ্কা হয়, আগামী দিনেও একইভাবে নির্দিষ্ট তথ্য ছাড়াই অন্য ভ্যাকসিনও অনুমোদন করা হবে।” এই আশঙ্কা থেকেই আবেদনকারী জানতে চেয়েছেন, ভ্যাকসিনের ক্লিনিকাল ট্রায়ালে কী তথ্য পাওয়া গিয়েছিল? ভ্যাকসিন নেওয়ার পরে কতজন অসুস্থ হয়ে পড়েছেন? আবেদনকারী বলেছেন, অন্যান্য দেশে লক্ষ্য রাখা হয়, ভ্যাকসিন নেওয়ার পরে কারও রক্ত জমাট বাঁধছে কিনা। ডেনমার্ক সম্প্রতি অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিন সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করে দিয়েছে।
পাশাপাশি সুপ্রিম কোর্ট পরিষ্কার জানিয়েছে, তারা ভ্যাকসিনের নিরাপত্তা নিয়ে সন্দেহ সৃষ্টি করতে চায় না। এমনিতেই অনেকে এখনও ভ্যাকসিন নিতে দ্বিধাগ্রস্ত। কিন্তু আবেদনকারী যে প্রশ্ন তুলেছেন, তাও যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ। তাই সুপ্রিম কোর্ট ব্যাপারটা খতিয়ে দেখতে চায়। এর আগে পুদুচেরির সমাজকর্মী সৌরভ দাস ভাকসিন নিয়ে রাইট টু ইনফর্মেশন আইনে কয়েকটি তথ্য জানতে চেয়েছিলেন। তাঁর প্রশ্ন ছিল, কীভাবে ভ্যাকসিন নিয়ে বিশেষজ্ঞ কমিটি গড়েছে কেন্দ্র? কীভাবে সেই কমিটি সিদ্ধান্ত নিল ৩০ কোটি মানুষকে আগে ভ্যাকসিন দেওয়া দরকার। ভ্যাকসিন দেওয়া শুরুর আগে কো-উইন অ্যাপের নিরাপত্তাই বা সুনিশ্চিত করা গেল কীভাবে? স্বাস্থ্যমন্ত্রক এবং সংশ্লিষ্ট দফতরগুলি এই সব প্রশ্নের জবাব দেয়নি। তাদের বক্তব্য ছিল, প্রশ্নগুলির উত্তর দিলে বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও অর্থনীতির ক্ষতি হতে পারে। সৌরভ দাস বলেছিলেন, “স্বাস্থ্যমন্ত্রক বেআইনি কাজ করছে। তথ্য জানার অধিকার আইনের ভিত্তিতে কেন তারা আমার প্রশ্নের জবাব দেবে না, তার কোনও নির্দিষ্ট কারণ জানায়নি।”