মারণ ভাইরাস করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে একমাত্র অস্ত্র ভ্যাকসিনই। যত বেশি ভ্যাকসিন, তত বেশি করোনার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ। অথচ দেশে টিকাকরণ শুরুর প্রথম থেকেই মোদী সরকারের বিরুদ্ধে পর্যাপ্ত ভ্যাকসিন না পাঠানোর অভিযোগ উঠেছে। এমনকী এখনও টান ভ্যাকসিনের জোগানে। বাংলাকে সরবরাহের ক্ষেত্রে বঞ্চনার আঁচও স্তিমিত হচ্ছে না। এরই মধ্যে ‘ফ্রি ভ্যাকসিন’ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর প্রচার খরচের অঙ্ক সামনে আসা মাত্র চোখ কপালে উঠছে মানুষের।
‘দাওয়াই ভি কড়াই ভি’, ‘সব কো ভ্যাকসিন, মুফত ভ্যাকসিন’, ‘ওয়ার্ল্ড’স লার্জেস্ট ফ্রি ভ্যাকসিনেশন ক্যাম্পেন’… প্রধানমন্ত্রীর ছবি দিয়ে এহেন সরকারি বিজ্ঞাপনী প্রচারে খরচ হয়েছে ২০৯ কোটি ৩ লক্ষ টাকা! যা দেখে বিরোধীদের অভিযোগ, টিকা সরবরাহে নজর নেই, কেন্দ্রের মনোযোগ শুধু প্রোপাগান্ডায়। যদিও ‘জনস্বাস্থ্য সচেনতার উদ্দেশ্যে’ কেন্দ্রীয় কোষাগার ভাঙিয়ে খরচ চলবে বলেই স্বাস্থ্যমন্ত্রক সূত্রে খবর।
সংসদে এক লিখিত প্রশ্নের উত্তরে স্বাস্থ্যমন্ত্রকের রাষ্ট্রমন্ত্রী ডাঃ ভারতী প্রবীণ পাওয়ার জানিয়েছেন, কোভিড পরিস্থিতিতে সচেতনতার লক্ষ্যে খবরের কাগজ, বৈদ্যুতিন মিডিয়া, সোশ্যাল মিডিয়া, টিভি, রেডিওর মাধ্যমে প্রচারে ১৯ কোটি ৬৬ লক্ষ ৪৩ হাজার ৬৬৮ টাকা খরচ হয়েছে। ২০২০ সালে স্রেফ লকডাউন, কোভিড মহামারী বিষয়ে প্রচারেই এই টাকা ব্যয় হয়েছিল। এরপর ২০২১ সালে টিকাকরণ শুরু করার পর থেকে জুন মাস পর্যন্ত ২০৯ কোটি ৩ লক্ষ টাকা খরচ হয়েছে। মন্ত্রী সরাসরি প্রধানমন্ত্রীর ছবি-সহ পোস্টারের বিষয়টি উল্লেখ না করলেও ছবিটি এখন দেশের মানুষের কাছে অতি পরিচিত।
প্রসঙ্গত, গত ২১ জুন থেকে টিকাকরণের সম্পূর্ণ দায়িত্ব কাঁধে নিয়েছে মোদী সরকার। ঘোষণার সময় প্রধানমন্ত্রীর খোঁচা ছিল, অনেক রাজ্য দাবি করেছিল, তাদের সুযোগ দেওয়া হোক। আমরা সেটা করেছিলাম। কিন্তু ফল দেখতে পাচ্ছি। তাই এখন থেকে কেন্দ্রীয় সরকারই এই কর্মকাণ্ডের যাবতীয় দায়িত্ব কাঁধে নিচ্ছে। অর্থাৎ, মোদীর কথা মতো ওই দিনের পর কোথাও আর ভ্যাকসিনের ঘাটতি থাকবে না। অথচ, এখনও বাংলার মতো অ-বিজেপি রাজ্যে নোটিস ঝোলাতে হচ্ছে, ‘কোভিশিল্ড অপর্যাপ্ত। তাই আজ টিকাকরণ বন্ধ রাখা হচ্ছে।’ বিরোধীরা প্রশ্ন তুলছে, সব নজরই যদি বিজ্ঞাপনী প্রচারে থাকে, তাহলে সরবরাহে নজর দেবেন কী করে!