গত ১৯ জুলাই সংসদে বাদল অধিবেশন শুরুর আগের দিনই সামনে চলে আসে পেগাসাস কাণ্ড। তার ফলে বাদল অধিবেশনের প্রথম দিন থেকেই এই ইস্যুতে উত্তাল লোকসভা ও রাজ্যসভা। বিরোধীদের হই-হট্টগোলের জেরে কার্যত অচল হয়ে আছে সংসদের দুই কক্ষই। কিন্তু, এর মধ্যেও সংসদে একের পর এক বিল পাস করানো হচ্ছে ঝড়ের গতিতে। না শোনা হচ্ছে বিরোধীদের আপত্তি। না হচ্ছে বিল নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা। বিল পাশের সময় ডিভিশন দেওয়া হয়নি। এবার যেমন সংসদে বিদ্যুৎ সংশোধনী বিল পেশ করতে চলেছে কেন্দ্রীয় সরকার। বিগত কয়েকদিন ধরেই নানা সূত্র মারফৎ এই তথ্য উঠে আসছিল। কেন্দ্রের এই সম্ভাব্য পদক্ষেপের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে এ বার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠি দিলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই চিঠিতে তিনি মোদীর কাছে আবেদন জানিয়েছেন, এই বিল আনার আগে যেন রাজ্যগুলির সঙ্গে শলা-পরামর্শ করে কেন্দ্র। এতে রাজ্যগুলির অধিকারকে নস্যাৎ করা হচ্ছে বলে তিনি দাবি করেছেন।
প্রধানমন্ত্রীকে দেওয়া চিঠিতে মুখ্যমন্ত্রী লিখেছেন, বিদ্যুতের বিষয়টি সংবিধানের যুগ্ম তালিকায় রয়েছে। তাই কেন্দ্রের উচিত এই বিল নিয়ে আসার আগে রাজ্যগুলির সঙ্গে আলোচনা করা। বিদ্যুৎ সংশোধনী বিল জনস্বার্থ বিরোধী বলেও চিঠিতে উল্লেখ করেছেন তিনি। যেহেতু বিদ্যুৎ সংবিধানের যৌথ তালিকাভুক্ত, সেই কারণে কেন্দ্রের এই ধরনের একতরফা পদক্ষেপ প্রবল ‘স্বৈরাচারী ও রাজ্য সরকারের অধিকারের ওপর সরাসরি হস্তক্ষেপ’ বলেই মনে করছেন তৃণমূল সুপ্রিমো। মুখ্যমন্ত্রীর দাবি, কেন্দ্রীয় সরকারের এই সংশোধনী সংসদে পাশ হলে এতে গরিব উপভোক্তারা বলি হবে। মমতার সাফ কথা, রাজ্যের সঙ্গে না কথা বলে এই বিল আনার পিছনে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে রয়েছে। বিল সংশোধনীর মাধ্যমে কেন্দ্রের তরফ থেকে খোলা বাজারের নীতি মেনে বেসরকারি ক্ষেত্রকে চরম মুনাফা করার সুযোগ করে দেওয়া হচ্ছে, দাবি করেছেন মমতা। বিদ্যুৎ বণ্টনের বিষয়টি রাজ্য নিয়ামক সংস্থার অধীনস্থ। এ ক্ষেত্রে সেই অধিকারও খর্ব করা হচ্ছে বলে তিনি দাবি করেছেন। তাই কেন্দ্র যেন এই বিল আনা থেকে বিরত থাকে, আবেদন জানিয়েছেন মমতা।