ভোট প্রচার-পর্বে বিজেপি-বিরোধিতায় তাদের ঘাটতি ছিল বলে আগেই মেনে নিয়েছিল রাজ্য সিপিএম। দলের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র সরাসরি কবুল করেছিলেন যে, ‘বিজেমূল’-এর মতো স্লোগান ব্যবহার করা ভুল হয়েছিল। বিজেপি ও তৃণমূলের মধ্যে বোঝাপড়া বোঝাতে সভা-সমাবেশে এমন কিছু কথা ও স্লোগান সিপিএমের বিভিন্ন স্তরের নেতৃত্বের মুখে শোনা গিয়েছিল, যার সঙ্গে বাস্তব পরিস্থিতির যোগ নেই। বরং ওই ধরনের প্রচার ‘জনমানসে’ বিভ্রান্তি তৈরি করেছিল। তবে দোষ কবুল করাতেই ‘সাত খুন মাফ’ নয়৷ এবার বিধানসভা ভোটে রাজ্যে শূন্য হয়ে যাওয়ার পরে দলের কেন্দ্রীয় কমিটিতে অগ্নি-বর্ষণের মুখে পড়ল আলিমুদ্দিন! নির্বাচনী কৌশলে ভুল পথে হেঁটেই বাংলায় বামেদের ভরাডুবি হয়েছে, এই অভিযোগে সরব হলেন কেরালা, অন্ধ্রপ্রদেশ, তেলঙ্গানা-সহ একাধিক রাজ্যের নেতারা। ‘মোদী এবং দিদি’কে এক করে দেখাও বিপর্যয়ের অন্যতম কারণ, সেই বিষয়ও উঠে এসেছে কেন্দ্রীয় কমিটির অন্দরে।
প্রসঙ্গত, সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির তিন দিনের যে বৈঠক শুরু হয়েছে শুক্রবার, তার প্রথম পর্বে রয়েছে পাঁচ রাজ্যের নির্বাচনী পর্যালোচনা। আলিমুদ্দিন স্ট্রিটের দফতরে বসেই ভার্চুয়াল বৈঠকে অংশগ্রহণ করছেন এ রাজ্য থেকে কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্যেরা। প্রথম দিনে কম-বেশি ৩৭ জন বক্তা ছিলেন। দলীয় সূত্রের খবর, নজিরবিহীন সাফল্যের জন্য কেরালার সিপিএম যেমন তারিফ কুড়িয়েছে, তেমনই বেনজির ভরাডুবির জন্য সমালোচনার মুখে পড়েছেন বঙ্গ সিপিএমের নেতৃত্ব। বামফ্রন্ট তার পুরনো ঐতিহ্য ধরে রেখে বাম ঐক্যের উপরে নির্ভর করে ভোটে লড়লেই ভাল করত বলে মত দিয়েছেন অনেকে। দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব কংগ্রেসের প্রতি ‘দুর্বলতা’ দেখিয়েছেন এবং বাংলায় বিপর্যয়ের দায় তাঁরাও এড়াতে পারেন না— এই কথা বলে নাম না করে সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরির প্রতিও ইঙ্গিত করেছেন কেউ কেউ।