সত্য এবং বাস্তবকে লুকিয়ে রাখতেই পেগাসাসকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করেছে মোদী সরকার। এমনটাই মনে করেন রাহুল গান্ধী। প্রাক্তন কংগ্রেস সভাপতির মতে— যুব সমাজ যে মুহূর্তে সত্যকে উপলব্ধি করতে পারবে, সঙ্গে সঙ্গে মোদী সরকার ভেঙে ছত্রখান হয়ে যাবে। তবে সেটা যে সহজে হবে না, পেগাসাসের মতো স্পাইওয়্যার ব্যবহার তার প্রমাণ। তিনি বলেন, ‘কৃষক, যুবকদের অবদমিত করে রাখা হয়েছে, ছোট ব্যবসায়ীদেরও। এই সরকার কর্মসংস্থানে ব্যর্থ। এ হল ‘হাম দো, হমারা দো’ সরকার। দু’তিন জন বৃহৎ শিল্পপতির সঙ্গে গাঁটছাড়ার জোরে আজ টিকে আছেন মোদী। আর এই ব্যবস্থা টিকিয়ে রাখতেই তাদের অস্ত্র পেগাসাস।’
প্রসঙ্গত, বাদল অধিবেশন শুরুর আগের দিন থেকেই ইজরায়েলি সংস্থা এনএসও-র তৈরি মোবাইলে আড়িপাতার সফটওয়্যার পেগাসাস নিয়ে গোটা দেশ তোলপাড়। অভিযোগ উঠেছে, ভারতের বহু বিশিষ্ট সাংবাদিক-সহ সমাজের প্রায় সর্ব স্তরের নেতৃস্থানীয়দের মোবাইলে এই স্পাইওয়্যারের সাহায্যে আড়ি পাতা হয়েছে। এই তালিকায় রাহুল বা তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো বিরোধী রাজনৈতিক নেতারাও রয়েছে।
মোদী সরকার যদিও স্বীকার করেনি যে তারাই এই আড়ি পাতার সামগ্রী কিনে কাজে লাগিয়েছে। কিন্তু প্রস্তুতকারী সংস্থা এনএসও জানিয়েছে— ইজরায়েল সরকারের অনুমোদন সাপেক্ষে কেবলমাত্র কোনও দেশের সরকারকেই তারা পেগাসাস বিক্রি করেছে। ফলে বিরোধীরা পেগাসাস ব্যবহারের জন্য মোদী সরকারকেই দুষছেন। কেন্দ্রীয় সরকারও বিষয়টি নিয়ে মুখবন্ধ রাখার কৌশল নিয়ে সন্দেহের কুয়াশাকে আরও গাঢ় করে তুলেছে। সংসদে বিষয়টি নিয়ে আলোচনার প্রস্তাবেও তারা নারাজ।
এই পরিস্থিতিতে রাহুলের অভিযোগ— মোদী সরকারের লক্ষ্য সব রকম ভাবে দেশের সাধারণ মানুষ, বিশেষ করে যুব সমাজের কাছে সত্যকে লুকিয়ে রাখা। তিনি বলেন, ‘আমার মোবাইলে আড়ি পাতা মানে প্রত্যেক যুবকের ফোনে আড়ি পাতা। উদ্দেশ্য হল প্রকৃত সত্যটাকে লুকিয়ে রাখা। পেগাসাসের মাধ্যমে সবার ফোনে ঢুকে বসে আছেন মোদী!’ তাঁর সাফ কথা, ‘সরকারের সব আয়োজনেরই উদ্দেশ্য সত্যকে চেপে রাখা। সংসদে বিরোধীরা সরকারের অপশাসনের বিরুদ্ধে গলা ফাটিয়ে প্রতিবাদ জানাচ্ছেন, কিন্তু লোকসভা বা রাজ্যসভা টিভি তা দেখাচ্ছে না। তারা বিজেপি সাংসদদের বক্তৃতাটাই দেখিয়ে চলেছে।’