এবার মোটা টাকার বিনিময়ে সরকারি চাকরিতে ভুয়ো নিয়োগপত্র দিয়ে প্রতারণার অভিযোগ উঠল। আর এই অভিযোগে আলিপুরদুয়ারের বিজেপি বিধায়ক সুমন কাঞ্জিলাল ঘনিষ্ঠ সুদীপ ঘোষকে গ্রেপ্তার করল পুলিশ। রবিবার রাতে আলিপুরদুয়ারের রেল জংশন থেকে পুলিস অভিযুক্ত ওই যুবককে গ্রেপ্তার করে। ধৃতকে সোমবার পুলিশ আলিপুরদুয়ার আদালতে পেশ করে। অভিযোগ, বিধায়ক সুমনবাবুর এমএলএ অফিসে বসেই ধৃত যুবক সরকারি চাকরি দেওয়ার নাম করে ভুয়ো নিয়োগপত্র দিচ্ছিল। কিছুদিন ধরেই সে এই প্রতারণা চক্র চালাচ্ছিল। জেলার পুলিশ সুপার ভোলানাথ পাণ্ডে বলেন, নির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে সুদীপ ঘোষকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বিস্তারিত তদন্তের জন্য ধৃতকে আদালতে তুলে হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। আইন আইনের পথে চলবে। ধৃতকে ১৪ দিনের জন্য নিজেদের হেফাজতে নিতে পুলিশ এদিন আলিপুরদুয়ার আদালতে আবেদন জানায়। আলিপুরদুয়ার থানার আইসি অনিন্দ্য ভট্টাচার্য বলেন, “আদালত ধৃত যুবককে সাতদিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে।”
প্রসঙ্গত, ধৃত যুবকের বিরুদ্ধে বিদ্যুৎ বণ্টন কোম্পানিতে মোটা টাকার বিনিময়ে ভুয়ো নিয়োগপত্র দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। এ নিয়ে জুলাই মাসে বিদ্যুৎ বণ্টন কোম্পানির আলিপুরদুয়ারের ডিভিশনাল ম্যানেজার নবীন খাওয়াস আলিপুরদুয়ার থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন। যদিও বিদ্যুৎ দপ্তরের তরফে দায়ের করা সেই অভিযোগে বিধায়ক ঘনিষ্ঠ ওই যুবকের নাম ছিল না। কিছুদিন আগে পুলিশ সুপারের কাছে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রাক্তন বিধায়ক সৌরভ চক্রবর্তী বিদ্যুৎ দপ্তরে টাকার বিনিময়ে ভুয়ো চাকরি নিয়োগপত্র দেওয়ার জন্য সরাসরি বিজেপি বিধায়ক সুমনবাবুর ঘনিষ্ঠ সুদীপ ঘোষের নামে অভিযোগ দায়ের করেন। সৌরভবাবু বিষয়টি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও বিধানসভার স্পিকারকেও চিঠি দিয়ে বিস্তারিত জানিয়েছেন বলে দাবি করেন।
এরপর বিজেপি বিধায়ক ঘনিষ্ঠ ওই যুবকের গ্রেপ্তারের দাবিতে তৃণমূল শহরে মিছিলও করে। পুলিস রবিবার রাতে ওই যুবককে গ্রেপ্তার করে। আলিপুরদুয়ারের প্রাক্তন বিধায়ক সৌরভবাবু বলেন, “শেষপর্যন্ত ওই যুবক গ্রেপ্তার হওয়ায় পুলিশকে ধন্যবাদ জানাই। তবে আমাদের দাবি, বিজেপি বিধায়কের অফিসে বসে ওই যুবক টাকার বিনিময়ে সরকারি চাকরিতে ভুয়ো নিয়োগপত্র দেওয়ার চক্র চালিয়েছে। বিজেপি বিধায়ক এটা জানেন না, তা হতে পারে না। বিধায়ক এ ঘটনার দায় কোনওভাবেই এড়াতে পারেন না।” পরিতোষ দাস নামে শহরের প্রতারিত এক ব্যক্তি সংবাদ মাধ্যমকে জানিয়েছেন, “বিদ্যুৎ বণ্টন কোম্পানিতে আমার ছেলেকে চাকরি দেওয়া হবে বলে ওই যুবক আমার কাছ থেকেও ১৫ হাজার টাকা নিয়ে নিয়োগপত্র দিয়েছিল। পরে ওই নিয়োগপত্র নিয়ে আলিপুরদুয়ারে বিদ্যুৎ দপ্তরে চাকরিতে যোগ দিতে গিয়ে ছেলে জানতে পারে, ওই নিয়োগপত্র ভুয়ো। ওই যুবক আমার ছেলেকেও ঠকিয়েছিল।” ভুয়ো চাকরি দেওয়ার এই প্রতারণাচক্রের সঙ্গে আর কোন কোন ব্যক্তি জড়িত, এখন ধৃতকে জেরা করে সেটাই জানার চেষ্টা করছে পুলিশ।