দেশজুড়ে বিশাসিত রাজ্যগুলির তুলনায় অনেকটা কম করোনা-টিকা পাচ্ছে বাংলা, এমনটা বলছে কেন্দ্রীয় সরকারের পরিসংখ্যানই। কো-উইন অ্যাপের ওই হিসেব বলছে, চলতি বছরের ১লা জানুয়ারি থেকে ৩০শে জুন পর্যন্ত উত্তরপ্রদেশ পেয়েছে ৩ কোটি ২৮ লাখ ৮১ হাজার টিকা, গুজরাট পেয়েছে ২ কোটি ৫৯ লাখ ৭৮ হাজার টিকা। সেখানে ওই একই সময়ের মধ্যে বাংলার টিকা প্রাপ্তির সংখ্যা ২ কোটি ২৮ লাখ ৫৯ হাজার। অথচ এখনও পর্যন্ত টিকা নষ্ট না-করার নিরিখে বাংলা রয়েছে প্রথম সারিতে। শুধু বছরের এই প্রথম ছ’মাসে নয়, তার পরেও চাহিদা মতো টিকা এই রাজ্যে আসছে না বলে স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর। স্বাস্থ্যভবনের কর্তাদের আশঙ্কা, এই পরিস্থিতিতে অগস্ট মাসেও টিকাকরণ গতি হারাবে। স্বাস্থ্য দপ্তরের বক্তব্য, জুলাই মাসেও রাজ্যের চাহিদা মতো টিকা কেন্দ্রীয় সরকার পাঠায়নি।
সম্প্রতি স্বাস্থ্যভবন সূত্রে জানা গিয়েছে, আগস্ট মাসে রাজ্যে ৬৪ লাখ ১ হাজার ৪২০ ডোজ টিকা এসে পৌঁছনোর কথা। ১৩ ধাপে আসার কথা ওই টিকার। তার পরেও টিকা প্রাপ্তির নিরিখে বছরের এই মাসে উত্তরপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র ও বিহারের পর চতুর্থ স্থানে থাকবে বাংলা। এই মাসে ১ কোটি ৩৬ লাখ টিকা পাবে উত্তরপ্রদেশ। মহারাষ্ট্র পেতে চলেছে ৮১ লাখেরও বেশি টিকা। বিহারও ৬৪ লাখের উপরে টিকা পাবে, তবে সেটা পশ্চিমবঙ্গের চেয়ে বেশি, এমনটাই জানাচ্ছেন স্বাস্থ্যভবনের কর্তারা। কলকাতা-সহ রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় টিকা না-পেয়ে মানুষ ক্ষুব্ধ হচ্ছেন, অশান্তি হচ্ছে এবং চাহিদা মতো টিকা না-আসার কারণেই এমনটা হচ্ছে বলে বার বার জানাচ্ছে রাজ্য সরকার। স্বাস্থ্য অধিকর্তা অজয় চক্রবর্তী সখেদে বলছেন, “আমাদের যা পরিকাঠামো, তাতে কলকাতা পুর এলাকায় দৈনিক এক লক্ষ মানুষকে টিকা দেওয়ার ক্ষমতা রয়েছে। কিন্তু টিকার ঠিক মতো জোগান না-থাকার ফলে সমস্যা হচ্ছে।”
উল্লেখ্য, সপ্তাহেই রাজ্য জুড়ে বেশ কয়েক দিন কোভ্যাক্সিন দেওয়া বন্ধ ছিল। তবে চলতি সপ্তাহে সব মিলিয়ে ৫ লক্ষ কোভ্যাক্সিন এসেছে বলে সূত্রের খবর। সেই জন্য শহরে কাল, মঙ্গলবার থেকে ফের কোভ্যাক্সিন দেওয়া শুরু করছে কলকাতা পুরসভা। তবে আপাতত দ্বিতীয় ডোজই দেওয়া হবে। পুরসভা জানাচ্ছে, গীতাঞ্জলি কমিউনিটি হল, মুক্তধারা, স্টার থিয়েটার, চোরবাগান কমিউনিটি হল, নীলমাধব লেনের বিআর-ফাইভ কমিউনিটি হল, সুরেন্দ্রনাথ কলেজ, এলিট সিনেমা হল, রক্সি সিনেমা হল, শরৎ স্মৃতি সদন, উত্তম মঞ্চ, বাসন্তী দেবী কলেজ, ক্যানাল রোড কমিউনিটি হল, তারাতলা সরকারি বাস ডিপো, শরৎ সদন এবং পুর স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলি মিলিয়ে ৩০ হাজার নাগরিককে কোভ্যাক্সিনের দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া হবে। বৃহস্পতিবারের মধ্যে যাঁদের কোভ্যাক্সিনের দ্বিতীয় ডোজ বাকি রয়েছে, তাঁদের টিকাকরণ শেষ হবে বলে দাবি করেছে পুর কর্তৃপক্ষ।