একুশের ভোটের আগে বাঙালির ভাবাবেগকে হাতিয়ার করতে বাঙালির আইকন নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুকে নিয়ে স্বপ্ন ফেরি করেছিলেন খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। কিন্তু বাংলা দখলের স্বপ্ন মাঠে মারা যাওয়ার পর সেই নেতাজীকেই কার্যত ভুলতে বসেছে মোদী সরকার। চলতি বাদল অধিবেশনে নেতাজি সম্পর্কিত বেশ কয়েকটি প্রশ্ন তুলেছিলেন হুগলির বিজেপি সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়। তার জবাবে কেন্দ্র যা জানিয়েছে, তাতে কোথাও তৃণমূলের দীর্ঘদিনের দাবিগুলোর মান্যতা দেওয়া হয়নি।
লকেটের প্রশ্নের জবাবে কেন্দ্রের তরফে বলা হয়েছে, ভারত সরকার নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু সম্পর্কিত বিভিন্ন প্রস্তাব অনুমোদন করেছে। তাঁর মধ্যে রয়েছে লালকেল্লায় এবং কলকাতার কাছে নীলগঞ্জে ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল আর্মি (আইএনএ)-র শহীদদের একটি স্মৃতিসৌধ প্রতিষ্ঠা, নেতাজি এবং আইএনএ সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত ভিডিও, ও একটি তথ্যচিত্র নির্মাণ। তা ছাড়া কর্নেল ধিলো বং জেনারেল শাহনওয়াজ খানের জীবনীও প্রকাশ করবে কেন্দ্রীয় সরকার।
লকেটের প্রশ্নের জবাবে কেন্দ্র আরও জানিয়েছে, আইএনএ-র ছবিগুলি একটি সচিত্র বই আকারে প্রকাশ করা হবে। শিশু মনে নেতাজির জীবন যাতে রেখাপাত ঘটায় তাঁর জন্য শিশু-বান্ধব কমিকস প্রকাশ করবে কেন্দ্রীয় সরকার। কেন্দ্রীয় সরকার এ-ও বলেছে, নেতাজি এবং আইএনএ-এর সঙ্গে সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ তারিখগুলিও উদযাপন করা হচ্ছে।
নেতাজির তৈরি রাজনৈতিক দল ফরওয়ার্ড ব্লক-সহ সমস্ত বাম দলগুলির দাবি, ২৩ জানুয়ারিকে দেশপ্রেম দিবস হিসেবে ঘোষণা করা হোক। তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দাবি করেছিলেন, ২৩ জানুয়ারিকে জাতীয় সংহটি দিবস হিসেবে ঘোষণা করে জাতীয় ছুটি ঘোষণা করুক দিল্লী। আর একটি বাম দল দাবি করেছিল, লালকেল্লার নাম হোক আইএনএ ফোর্ট। কিন্তু সংসদে লকেটের প্রশ্নের জবাবে কেন্দ্র যে যে সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছে, তাতে কোনও দাবিকেই মান্যতা দেওয়া হয়নি।