সম্প্রতি উত্তরপ্রদেশের সাহারানপুরের প্রবীণ কুমারকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছিল উত্তরপ্রদেশ পুলিশের সন্ত্রাসদমন শাখা (এটিএস)।
অভিযোগ ছিল, তিনি নাকি সন্ত্রাসবাদী হামলার ছক কষেছেন ও ইসলাম ধর্মে রূপান্তরিত করার চেষ্টা করেছেন অ-মুসলিমদের। স্রেফ সন্দেহের বশে এই হয়রানি মানতে পারেননি প্রবীণবাবু। তাই তিনি দ্বারস্থ হয়েছেন দেশের সর্বোচ্চ আদালতের। সাহারানপুর থেকে পায়ে হেঁটে সুপ্রিম কোর্টের পথে পাড়ি দিয়েছেন প্রবীণ কুমার। উদ্দেশ্য একটাই। বিচার চাই। অযথা হয়রানি, মিথ্যা অভিযোগের বিচার চাই। গত চারদিন ধরে পথেই হাঁটছেন তিনি।
প্রসঙ্গত, গত মাসে ধর্মান্তকরণের একটি চক্রের তদন্ত শুরু করে উত্তরপ্রদেশ এটিএস। তাতেই নাম জড়ায় প্রবীণ কুমারের। অভিযোগ ছিল তিনি নাকি বিদেশ থেকে টাকা নিয়ে এসে এদেশে মানুষদের ধর্মান্তরিত করার চেষ্টা করেছেন। ছক কষেছেন সন্ত্রাসেরও। প্রবীণ কুমার ইতিমধ্যেই নরেন্দ্র মোদী, যোগী আদিত্যনাথকে নিয়ে বই প্রকাশ করেছেন বলে জানিয়েছেন। সে বইতে আছে, কীভাবে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন প্রধানমন্ত্রী এবং উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু গত মাসে সেই তাঁকেই সন্দেহের বশে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য লক্ষ্ণৌতে নিয়ে যান এটিএস আধিকারিকরা।
পাশাপাশি প্রবীণ জানিয়েছেন, পুলিশ ভেবে নিয়েছে তিনি নাম পরিবর্তন করে কাজ চালিয়েছেন। সামাদ ছদ্মনাম নিয়ে বড় ষড়যন্ত্রে লিপ্ত ছিলেন তিনি। পুলিশি জেরার মুখে সবরকম সহায়তা করেছেন প্রবীণ কুমার। যা যা তাঁকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছে উত্তর দিয়েছেন সব প্রশ্নেরই। আটকে রাখার মতো কোনও কারণ খুঁজে না পেয়ে আবার সাহারানপুরে পুলিশ তাঁকে ফিরিয়ে দিয়ে যায়। কিন্তু এত সহজে ছেড়ে দিতে রাজি নন প্রবীণ। এমন কাজের কী সাফাই দিচ্ছে উত্তরপ্রদেশের পুলিশ? তারা জানিয়েছে, প্রবীণ কুমারের নাম তদন্তে উঠে এসেছিল। ধর্মান্তকরণ চক্রের মূল পাণ্ডা উমর গৌতমের সূত্রেই তাঁর নাম আসে। তাই রুটিন ডিউটি হিসেবে প্রবীণ বাবুকে জেরা করা হয়েছে। তারপর আবার ছেড়েও দেওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত কয়েকদিন ধরেই চারপাশে সবাই প্রবীণবাবুকে ‘সন্ত্রাসবাদী’ আখ্যা দিচ্ছে। বিশ্বাসঘাতক তকমা লেগে গেছে তাঁর নামের সঙ্গে। এমনকী একদিন সকালে তিনি ‘পাকিস্তানি মুসলমান’ নামের একটি ভয় দেখানো চিঠিও পেয়েছেন। এই পরিস্থিতির প্রতিকার চান প্রবীণ। তাই শীর্ষ আদালতের পথে পায়ে হেঁটেই পাড়ি দিয়েছেন। সাহারানপুরের ডিএমের কাছে গত মঙ্গলবার নিজের লিখিত বক্তব্য জানিয়েছেন প্রবীণ। তারপর দুটো বই, কিছু জামাকাপড় সঙ্গে দিয়ে রওনা দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের উদ্দেশে।