শনিবার ফেসবুকে আচমকা বিস্ফোরক পোস্ট করেন বাবুল সুপ্রিয়। তিনি সরাসরি রাজনীতিকে বিদায় জানানোর কথা বলেন। আর তা থেকেই গুঞ্জন শুরু হয় রাজনৈতিক মহলে। যদিও মন্ত্রিত্ব যাওয়ার পর থেকেই দলের সঙ্গে দূরত্ব তৈরি হয়েছিল বাবুলের। রাজনীতি ছাড়লেও কোনও দলে যাচ্ছেন না, সেটাও ,স্পষ্ট করেন বাবুল।
তবে এদিন বাবুলকে পাল্টা নিশানা করে কুণাল ঘোষ ট্যুইটে বলেন, “যদি কেউ রাজনীতি ছাড়ার কথা বলেন, তাহলে আগে সাংসদ পদ ছাড়ুন। নাহলে বলব নাটক। মন্ত্রিত্ব হারিয়ে দলে কোণঠাসা হয়ে হতাশার কারণে প্রচারে ভেসে থেকে দিল্লির দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা।”
ফেসবুক পোস্টে বাবুল লেখেন, “চললাম। সবার সব কথা শুনলাম – বাবা, (মা) স্ত্রী, কন্যা, দুএকজন প্রিয় বন্ধুবান্ধব। সবটুকু শুনে বুঝেই অনুভব করেই বলি, অন্য কোন দলেও যাচ্ছি না – তৃণমূল, কংগ্রেস কিংবা সিপিএম। কোথাও নয় এটা কনফার্ম করছি। কেউ আমাকে ডাকেওনি। আমিও কোথাও যাচ্ছি না। আমি একজন দলের খেলোয়াড়। আমি সবসময় মোহনবাগানকে সাপোর্ট করি। পশ্চিমবঙ্গের বিজেপিতেও ছিলাম আমি। চললাম ‘বেশ কিছু সময়ে তো থাকলাম’.. কিছু মন রাখলাম কিছু ভাঙলাম.. কোথাও আপনাদের হয়তো আমার কাজে খুশি করলাম, কোথাও নিরাশ হতাশ করলাম। মূল্যায়ন আপনারাই নয় করবেন। আমি ‘আমার’ মনে ওঠা সব প্রশ্নের জবাব দেওয়ার পরই বলছি.. আমার মতো করেই বলছি।”
বাবুল বলেন, “প্রার্থনা করি ওঁরা আমায় ভুল না বুঝে, ক্ষমা করবেন। আমি আর বিশেষ কিছু বলবো না – এখন ‘আপনারা বলবেন আমি শুনব’ – দিনেরবেলায়, ‘সন্ধ্যাবেলায়’ । কিন্তু একটা প্রশ্নের জবাব আমাকে দিয়ে যেতেই হবে।! প্রশ্ন উঠবেই কেনই বা রাজনীতি ছাড়তে গেছিলাম? মন্ত্রিত্ব চলে যাওয়ার সাথে তার কি কোনো সম্পর্ক আছে? হ্যাঁ আছে – কিছুটা তো নিশ্চয় আছে ! তঞ্চকতা করতে চাইনা তাই সে প্রশ্নের উত্তর দিয়ে গেলেই তা সঠিক হবে-আমাকেও তা শান্তি দেবে।
২০১৪ আর ২০১৯-এর মধ্যে অনেক ফারাক। তখন শুধু বিজেপির টিকিটে আমি একাই ছিল কিন্তু আজ বাংলায় বিজেপিই প্রধান বিরোধী দল। আজ পার্টিতে অনেক নতুন তরুণ তুর্কী নেতা যেমন আছে তেমনি অনেক প্রবীণ বিদগ্ধ নেতাও আছেন। এঁদের নেতৃত্বে দল এখান থেকে অনেক দূর যাবে এটা বলাই বাহুল্য। বলতে দ্বিধা নেই যে আজ পার্টিতে কোনও একজন ব্যক্তিবিশেষের থাকা না থাকাটা যে কোন বড় ব্যাপার নয় তাও স্পষ্ট হয়েছে এবং এটা মেনে নেওয়াটাই যে সঠীক সিদ্ধান্ত হবে এটাই আমার দৃঢ়, সুদৃঢ় বিশ্বাস!”
এদিন বাবুল ফেসবুকে লেখেন, ভোটের আগে থেকেই কিছু কিছু ব্যাপারে রাজ্য নেতৃত্বের সাথে মতান্তর হচ্ছিল – তার জন্য কোথাও আমি দায়ী। আবার কোথাও অন্য নেতারাও ভীষণভাবে দায়ী, যদিও কে কতটা দায়ী সে প্রসঙ্গে আমি আজ আর যেতে চাইনা – কিন্তু সিনিয়র নেতাদের মতানৈক্য ও কলহে পার্টির ক্ষতি তো হচ্ছিলই, ‘গ্রাউন্ড জিরো’-তেও পার্টির কর্মীদের মনোবলকে যে তা কোনোভাবেই সাহায্য করছিলো না তা বুঝতে ‘রকেট বিজ্ঞান’-এর জ্ঞানের দরকার হয়না। এই মুহূর্তে তো তা একেবারেই অনভিপ্রেত তাই আসানসোলের মানুষকে অসীম কৃতজ্ঞতা ও ভালোবাসা জানিয়ে আমিই সরে যাচ্ছি।