এই ঘটনাটি ঘটেছে বুধবার উত্তরপ্রদেশের বালিয়ায় জেলা আদালত চত্বরে। ধর্মান্তকরণ রোখার নামে উত্তরপ্রদেশে জোর করে ভিন্ধর্মী যুগলের বিয়ে আটকে দেওয়ার অভিযোগ করণী সেনার বিরুদ্ধে। হাঙ্গামা বাধিয়ে আদালত চত্বর থেকে ওই যুগলকে বেরিয়ে যেতে বাধ্য করা হয় বলে অভিযোগ। গোটা ঘটনার একটি ভিডিও নেটমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।
তাতে ১৮ ঊর্ধ্ব জানানো সত্ত্বেও ওই তরুণীকে কার্যত হেনস্থা করতে দেখা গিয়েছে করণী সেনার সদস্যদের। সংগঠনের প্রধান চেতন সিংহের নির্দেশেই হিন্দু-মুসলিম বিয়ে আটকানোর কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে বলেও জানান তাঁরা।
২৪ বছরের দিলশাদ সিদ্দিকির সঙ্গে রেজিস্ট্রি বিয়ে করতে এসেছিলেন ওই দলিত তরুণী। কিন্তু খবর পেয়ে সেখানে এসে করণী সেনার সদস্যরা হট্টগোল শুরু করে দেন বলে অভিযোগ। পরিস্থিতি এমন দাঁড়ায় যে বিয়ে ফেলে রেখে আদালত থেকে বেরিয়ে যান ওই যুগল। কিন্তু ফোনে ভিডিও রেকর্ডিং করতে করতে তাঁদের পিছু নেন করণী সেনার সদস্যরা। তিনি কোন জাতের, বয়স কত, এ ভাবে বাবা-মায়ের মান সম্মান নিয়ে ছেলেখেলা করছেন কেন, প্রশ্নবাণে তরুণীকে বিদ্ধ করতে থাকেন তাঁরা।
প্রথমে চুপ থাকলেও, মেয়েটি জানান তাঁরা হরিজন। ১৮ ঊর্ধ্ব তিনি। নিজের ইচ্ছেতেই দিলশাদকে বিয়ে করতে চান। কারণ তাঁর বিশ্বাস, দিলশাদের সঙ্গে ভাল থাকবেন তিনি। বোরখা পরে কেন আদালতে এসেছেন, তা নিয়েও প্রশ্নের মুখে পড়তে হয় ওই তরুণীকে। তিনি জানান, নিজের ইচ্ছেতেই বোরখা পরে এসেছেন। কিন্তু তা বিশ্বাসযোগ্য মনে হয়নি করণী সেনার সদস্যদের। তাই দিলশাদকে হেনস্থা করতে শুরু করেন তাঁরা। তাঁকে হুমকিও দেওয়া হয়।
তাতে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যান তিনি। তার পরই সটান মেয়েটিকে বালিয়া কোতোয়ালি থানায় টেনে নিয়ে যান। সেখানে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয় তাঁকে। থানা থেকে মেয়েটিকে তাঁর পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয়। বালিয়ার পুলিশ সুপার বিপিন তাডা বলেন, ‘‘অপহরণ করে নিয়ে গিয়ে মেয়েকে জোর করে ধর্ম পরিবর্তন করানো হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছিলেন ওই তরুণীর বাবা। ওই তরুণীকে শীঘ্রই আদালতে তুলব আমরা। সেখানে তাঁর বয়ান রেকর্ড করা হবে। ওই তরুণী প্রাপ্তবয়স্ক। তাঁর বয়ানের ভিত্তিতে পরবর্তী পদক্ষেপ করা হবে।’’