ত্রিপুরায় আইপ্যাক কর্মীদের হোটেলবন্দি করে রাখা, তাঁদের শমন পাঠানো নিয়ে গত কয়েক দিন ধরেই সমালোচনার মুখে ত্রিপুরার বিজেপি সরকার। এই পর্বেই এবার ফের সামনে চলে এল ত্রিপুরা বিজেপির গোষ্ঠীকোন্দল। কারণ এবার মুখ খুলে ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য করলেন ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেবের তীব্র বিরোধী হিসেবে পরিচিত বিজেপি বিধায়ক সুদীপ রায় বর্মন। তিনি যা লিখেছেন তার অর্থ স্পষ্ট– তিনি একদিকে যেমন বিপ্লব দেব সরকারকে খোঁচা দিতে চেয়েছেন তেমনই বিজেপির সর্বোচ্চ নেতৃত্বের প্রতি আস্থা রাখতে চেয়েছেন। সুদীপ তাঁর টুইটে লিখেছেন, হঠকারিতা বশে বা ক্রুদ্ধ হয়ে নেওয়া সিদ্ধান্ত জাতীয়তাবাদ বিরোধী শক্তিকে সংহত করবে। জাতীয়তাবাদীদের শক্তিশালী করতে হলে উচ্চ নেতৃত্বের প্রতি আস্থা রাখা উচিত।
একাংশের মতে, সুদীপ আসলে বোঝাতে চেয়েছেন, আইপ্যাক কর্মীদের হোটেলে আটক করে রেখে আসলে তৃণমূলকে নড়াচড়া করার সুযোগ করে দিয়েছে বিপ্লব দেবের পুলিশ। প্রসঙ্গত, বিপ্লব বনাম সুদীপের কোন্দল ত্রিপুরার রাজনীতিতে সর্বজনবিদিত। সুদীপ ছিলেন ত্রিপুরার স্বাস্থ্যমন্ত্রী। গত লোকসভা ভোটের পর তাঁকে মন্ত্রিসভা থেকে সরিয়ে দেয় বিপ্লব দেব গোষ্ঠী। তারপর থেকে ছাইচাপা আগুন দাউদাউ করে জ্বলে ওঠে। পরিস্থিতি এমন হয় যে, গত ডিসেম্বরে বিপ্লব দেব হঠাত্ একদিন সাংবাদিক বৈঠক করে ঘোষণা করে বলেন, আস্তাবল ময়দানে তিনি গণরায় নেবেন। মানুষ না চাইলে মুখ্যমন্ত্রীর কুর্সিতে তিনি থাকবেন না। তা নিয়ে বিপ্লবকেও কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের ধমক শুনতে হয়েছিল। পরে অবশ্য সেই সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসেন বিপ্লব।
উল্লেখ্য, আগে কংগ্রেস ছিলেন সুদীপ রায় বর্মন। তাঁর বাবা সমীর রায় বর্মন ত্রিপুরার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী। পরে মুকুল রায়ের হাত ধরে তৃণমূলে যোগ দেন সুদীপ এবং তাঁর অনুগামী বিধায়করা। আঠারোর বিধানসভার আগে বিজেপিতে যান ৬ আগরতলার বিধায়ক। এদিকে, মুকুল রায় তৃণমূলে ফেরার পর থেকেই সুদীপের তৃণমূলে ঘর ওয়াপসির জল্পনা শুরু হয়ে গিয়েছে। যদিও সুদীপ এ ব্যাপারে বরাবরই কৌশলী জবাব দিয়েছেন। তাঁর বক্তব্য, ভবিষ্যতে কী হবে তা ভবিষ্যতই বলবে। কিন্তু দেখা গেল আইপ্যাক আটক নিয়ে যখন আগরতলার মাটি কামড়ে ধরতে চাইছে তৃণমূল তখন সুদীপ পরোক্ষে বিপ্লব দেব সরকারের সিদ্ধান্তকে আবেগতাড়িত হয়ে হঠকারী পদক্ষেপ বলেই কটাক্ষ করলেন। যা স্বাভাবিকভাবেই গেরুয়া শিবিরের অস্বস্তি বাড়িয়েছে।