রাজধানীতে পা রাখা ইস্তক বৈঠকের পর বৈঠক করে যাচ্ছেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী থেকে শুরু করে দিল্লীর মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল। বিরোধী শিবিরকে এককাট্টা করতে এখন থেকেই পুরোদমে ময়দানে ‘দিদি’।
বিজেপিকে রুখতে হলে বিরোধীদের একজোট হতে হবে বলে বার্তা দিয়েছিলেন গত একুশে জুলাইয়ের মঞ্চে থেকে। আর দিল্লীতে সোনিয়া গান্ধির সঙ্গে বৈঠক সেরে জোটের স্বার্থেই তিনি বললেন, ‘আমি লিডার নই, আমি ক্যাডার’। একইসঙ্গে বুঝিয়ে দিলেন, সোনিয়ার সঙ্গে বৈঠক ফলপ্রসূই হয়েছে। বুধবার সনিয়ার সঙ্গে বৈঠক ছাড়াও কেজরিওয়ালের সঙ্গেও মিটিং করেছেন তৃণমূল নেত্রী। কংগ্রেস, আপ-দুপক্ষের সঙ্গেই মমতার এই বৈঠক-কৌশল নিয়ে আলাদা চর্চা কেড়েছে দিল্লীর রাজনৈতিক মহলে।
এই পরিস্থিতিতে বৃহস্পতিবার আরেক বিজেপি বিরোধী দল ডিএমকে-র সাংসদ কানিমোঝির সঙ্গে বৈঠক করবেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। বৈঠক রয়েছে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নীতিন গাডকরির সঙ্গে। সেখানে রাজ্যের প্রকল্পের বিষয়ে দাবিদাওয়া তুলে ধরতে পারেন তিনি। বিকেল পাঁচটায় তিনি দেখা করবেন জাভেদ আখতার ও শাবানা আজমির সঙ্গে।
বুধবার কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া এবং সাংসদ রাহুল গান্ধীর সঙ্গে বৈঠক সেরেই সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হন মমতা। বিজেপি বিরোধী জোটে তিনিই নেতৃত্ব দেবেন কি না, জানতে চাওয়া মাত্রই মমতার জবাব, ‘বিজেপিকে হারাতে হলে সকলকে একজোট হয়ে লড়তে হবে। আমি একা আমি কিছু করতে পারব না। আমি লিডার নই, ক্যাডার। আমি একজন স্ট্রিট ফাইটার।’
সূত্রের খবর, এ দিনের সোনিয়া রাহুলের সঙ্গে বৈঠকে কোন কোন দলগুলিকে বিরোধী জোটে সামিল করা যায়, তা নিয়ে আলোচনা করেছেন মমতা৷ তবে সোশ্যাল মিডিয়ায় ‘আব কি বার, দিদি সরকার’ স্লোগান উঠলেও তিনি নিজেকে ‘লো প্রোফাইলে’ই রাখছেন৷ বরং বারবার মুখে আনছেন সংঘবদ্ধ জোটের কথা। তবে রাজনৈতিক মহল বলছে, মমতা ইতিমধ্যেই বাকি বিরোধী নেতাদের মধ্যে অনেকটা এগিয়ে গিয়েছেন। তা তাঁর জন্য সোনিয়া, রাহুলের দীর্ঘ বৈঠক, মমতা দিল্লী পৌঁছনোর পরই আনন্দ শর্মা, কমলনাথের মতো নেতাদের তাঁর কাছে পৌঁছে যাওয়া থেকেই স্পষ্ট। আর সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ হল, কংগ্রেসের সঙ্গে যে অরবিন্দ কেজরিওয়ালের আদায় কাঁচকলায় সম্পর্ক, সেই কেজরিও চলে এসেছেন মমতার কাছে।
ফলে রাজনৈতিক মহলের মতে, আপাতত বিরোধী দলগুলির মধ্যে সমন্বয় বাড়িয়ে নেওয়ার পক্ষে মমতা৷ করোনা পরিস্থিতি আরও কিছুটা নিয়ন্ত্রণে এলে বিরোধী দলগুলিকে নিয়ে ভবিষ্যৎ কর্মসূচির দিকে এগোবেন তিনি। এমনকী উত্তর প্রদেশের বিধানসভা নির্বাচনেও বিরোধী জোট গঠন করে লড়াইয়ের পক্ষে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ উত্তরপ্রদেশে প্রচারে যাওয়ারও কথা বলেছেন তিনি।