বেশ কিছুদিন ধরেই পেগাসাস স্পাইওয়্যারের মাধ্যমে ফোনে আড়িপাতা নিয়ে উত্তাল ভারতীয় রাজনীতি। এবার এ নিয়ে শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হলেন দেশের দুই প্রবীণ সাংবাদিক৷ গোটা ঘটনায় স্বতন্ত্র তদন্তের আর্জি জানিয়েছেন তাঁরা৷ সাংবাদিক এন রাম এবং শশী কুমারের দাবি, আদালতের কোনও বর্তমান বা অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতিকে দিয়ে এই তদন্ত করানো হোক৷
আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, আগামী কয়েক দিনের মধ্যেই মামলাটি সুপ্রিম কোর্টে শুনানির জন্য উঠবে৷ একইসঙ্গে মামলাকারীদের আবেদন, আদালত কেন্দ্রকে নির্দেশ দিয়ে জানাতে বলুক, সরকার বা সরকারি কোনও সংস্থার কাছে পেগাসাসের লাইসেন্স রয়েছে কি না। থাকলে সেই লাইসেন্স ব্যবহার করে কোনও ব্যক্তির ওপর নজরদারি চালানো হয়েছে কিনা।
মামলাকারীরা তাঁদের আবেদনপত্রে আদালতকে জানিয়েছেন, আন্তর্জাতিক স্তরে একাধিক সংবাদমাধ্যম পেগাসাস নিয়ে তদন্ত করেছে। তাতে দেখা যাচ্ছে, ভারতের অন্তত ১৪২ জন নাগরিকের ফোনে আড়ি পাতা হয়েছে৷ সেই তালিকায় অন্যদের পাশাপাশি সাংবাদিকরাও রয়েছেন। এরপরই সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের ব্যবহৃত মোবাইলগুলির ফরেনসিক পরীক্ষা করে জানা যায়, সংশ্লিষ্ট মোবাইল ফোনগুলিতে কোনও না কোনও সময়ে হানা দিয়েছিল ইজরায়েলি স্পাইওয়্যার পেগাসাস।
দুই আবেদনকারী তাঁদের বয়ানে জানিয়েছেন, সেনাবাহিনীতে যে ধরনের স্পাইওয়্যার ব্যবহার করা হয়, এক্ষেত্রেও নজরদারি চালানোর জন্য তেমনই উচ্চমানের ব্যবস্থাপনা ব্যবহার করা হয়েছে৷ যা কখনই গ্রহণযোগ্য নয়৷ এই ধরনের ঘটনা ভারতীয় সংবিধানের ১৪ নম্বর ধারা অনুযায়ী মৌলিক অধিকারের পরিপন্থী।
তাঁরা এ-ও জানিয়েছেন যে, এই নজরদারির অভিযোগ সত্যি হলে তা বাক-স্বাধীনতা, জীবনের সুরক্ষা ও ব্যক্তিগত গোপনীয়তা রক্ষার অধিকারকেও খর্ব করেছে৷ মামলাকারীদের মতে, চিকিৎসক, উকিল, সাংবাদিক, রাজনীতিক, সমাজকর্মীদের মতো ব্যক্তিত্বের ফোনে আড়ি পাতার ঘটনা বাক-স্বাধীনতার ওপর চরম আঘাত হানার সমান৷ এভাবে রাষ্ট্র বা অন্য কেউ কখনও কারও ওপর নজরদারি চালাতে পারে না।