বাকিরা সংসদে বিক্ষোভেই সীমাবদ্ধ থাকলেন৷ কিন্তু তিনি যে ২০২৪-এর আগে সত্যিই বিরোধী পথ দেখাতে চলেছেন, ফোনে আড়ি পাতা কাণ্ডে তদন্ত কমিশন গঠন করে তা ফের প্রমাণ করে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ বিশেষত দিল্লী যাত্রার আগে তাঁর এই সিদ্ধান্তে বিশেষ তাৎপর্য দেখছে রাজনৈতিক মহল৷ পেগাসাস বিতর্কেও বিরোধীদের একজোট করতেই যে তাঁর এই সিদ্ধান্ত, এ দিন দিল্লী যাওয়ার আগে তার স্পষ্ট ইঙ্গিত দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী৷
পেগাসাস বিতর্কে বিরোধী শাসিত রাজ্যগুলিও যাতে একই ভাবে তদন্তের পথে হাঁটে, সরাসরি না হলেও এ দিন সেই আর্জিও শোনা গিয়েছে মমতার গলায়৷ রাজনৈতিক মহল এবং পর্যবেক্ষকদের একাংশের মতেও, এই সিদ্ধান্তের মাধ্যমেই দিল্লী যাওয়ার আগে জাতীয় স্তরে নিজের মোদী বিরোধী ভাবমূর্তি আরও জোরালো করলেন মুখ্যমন্ত্রী৷
পেগাসাস বিতর্কে গত কয়েকদিন ধরেই সরগরম দিল্লী৷ বিরোধীদের প্রবল বিক্ষোভে পণ্ড হয়ে যাচ্ছে সংসদের কাজকর্ম৷ কিন্তু অন্যান্য বিরোধী দলগুলি যখন এই ইস্যুতে সংসদে হইহট্টগোল এবং তদন্তের দাবিতে বিবৃতি দিয়েই ক্ষান্ত হয়েছে, সেখানে একধাপ এগিয়ে তদন্ত কমিশন গঠনের সিদ্ধান্ত নিলেন মমতা৷ দিল্লী যাওয়ার আগেই সেই কমিশন গঠনের সিদ্ধান্ত ঘোষণাও করে দিলেন৷
রাজনৈতিক দিক থেকে পরিস্থিতি সাপেক্ষে এই সিদ্ধান্ত যে মমতাকে ফের জাতীয় স্তরে মোদী বিরোধী মুখ হিসেবে এক কদম এগিয়ে দিল, তা বলার অপেক্ষা রাখে না৷ সিএএ, এনআরসি থেকে শুরু করে কৃষি আইন, বা প্রাক্তন মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের বদলি কাণ্ড, কেন্দ্রের বিরুদ্ধে নিজের বিরোধিতাকে মমতা যেভাবে উচ্চগ্রামে নিয়ে গিয়েছিলেন, পেগাসাস বিতর্কেও তা অব্যাহত থাকল৷ শুধু তাই নয়, নির্বাচনের সময়েও জাতীয় স্তরে নিজের মোদী বিরোধী ভাবমূর্তি তৈরি করতে সরাসরি নির্বাচন কমিশনকে বার বার আক্রমণ করতেও পিছপা হননি মুখ্যমন্ত্রী৷ এ ক্ষেত্রেও বিরোধীরা বরাবরই সতর্ক অবস্থান নিয়েছেন৷ কিন্তু নির্বাচন কমিশনের তাঁকে শাস্তি দিলেও নিজের রাজনৈতিক কৌশলের সুফল পেয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ এবার ২০২৪-এর লক্ষ্যেও সেই একই কৌশলে এগোচ্ছেন তিনি৷ যতদিন যাবে, কেন্দ্রের সঙ্গে মমতার সরাসরি সংঘাত আরও বাড়বে বলেই মত রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের৷