বাংলা-সহ ৫ রাজ্যের নির্বাচনের ফল প্রকাশের পর থেকেই শুরু হয়েছে জ্বালানির চোখরাঙানি, পেট্রোল-ডিজেলের দাম বাড়ানোর বহর। আর জ্বালানির দামের ধাক্কায় বাজারে মূল্যবৃদ্ধির হারও বাড়ছে। স্বাভাবিকভাবেই এ নিয়ে আমজনতার মনে তৈরি হয়েছে তীব্র অসন্তোষ। তাঁদের ক্ষোভের কথা মোদী সরকারও ভালই টের পাচ্ছে। কিন্তু তারপরেও লাভ-লোকসানের অঙ্কে আটকে থাকছে পেট্রোল-ডিজেলের দাম কমার আশা। কারণ সরকার পেট্রল-ডিজেলের দাম কমানোর ভাল-মন্দ বিচার করতে গিয়ে দেখছে, তাতে মূল্যবৃদ্ধির হার বিশেষ কমবে না। উল্টে পেট্রোল-ডিজেলের ওপর কর ছাঁটাই করতে গেলে, সরকারের আয় অনেকখানি কমে যাবে।
অর্থ মন্ত্রকের এক শীর্ষকর্তার কথায়, ‘মে-জুন মাসের অনেকখানি সময় কোভিডের দ্বিতীয় ঢেউয়ের জেরে লকডাউন ছিল। পেট্রোল-ডিজেল বিক্রি কম হয়েছে। জ্বালানিতে উৎপাদন শুল্ক বাবদও কম আয় হয়েছে। এখন যদি আমরা পেট্রোল-ডিজেলে উৎপাদন শুল্ক ১০ টাকা কমাই, তা হলে রাজকোষ ঘাটতি ০.৬ শতাংশ বেড়ে যাবে।’ পেট্রোলের দাম সেঞ্চুরি পার করে ফেলেছে। ডিজেলের দাম নম্বইয়ের ঘরে ঢুকে পড়েছে। জ্বালানির দাম বাড়ায় পরিবহণের খরচ বেড়েছে। ফলে সব জিনিসপত্রেই তার প্রভাব পড়েছে। জুন মাসেই পাইকারি মূল্যবৃদ্ধির হার ১২.০৭ শতাংশে পৌঁছেছে। এখন পেট্রোল-ডিজেলে দাম কমিয়ে কি সরকার মূল্যবৃদ্ধি কমানোর চেষ্টা করবে?
অর্থ মন্ত্রকের ওই কর্তার জবাব, ‘আমরা যদি কর কমিয়ে পেট্রল-ডিজেলের দাম লিটারে ১০ টাকাও কমাই, তা হলে মূল্যবৃদ্ধির হার মাত্র ০.২ শতাংশ কমবে। তাতে আর কতটুকু লাভ হবে? কিন্তু তা করতে গিয়ে রাজকোষ ঘাটতি অনেকখানি বেড়ে যাবে।’ সূত্রের খবর, বিজেপির তরফ থেকে পেট্রল-ডিজেলের দাম নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে অসন্তোষ বাড়ছে বলে সরকারকে জানানো হয়েছে। কিন্তু সরকারি সূত্রের মতে, এখনই সামনে কোনও নির্বাচন নেই। ফলে দাম কমাতেই হবে, এমন কোনও রাজনৈতিক বাধ্যবাধকতাও নেই। তবে তা সত্বেও সাধারণ মানুষকে সুরাহা পাইয়ে দেওয়ার রাস্তা খোঁজা হচ্ছে।