মিলছিল না জেলা প্রশাসনের অনুমতি৷ তাই পরিকল্পনা সত্ত্বেও ত্রিপুরায় একুশে জুলাই পালন করতে গিয়ে জটিলতার মুখে পড়েছিল তৃণমূল৷ পরিকল্পনা ছিল, আগরতলা-সহ বিভিন্ন জায়গায় জায়ান্ট স্ক্রিন বসিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য শোনানো হবে৷ কিন্তু জেলাশাসকের অনুমতি না মেলায় জায়ান্ট স্ক্রিন বসানোও সম্ভব হয়নি। ত্রিপুরায় বেলা ২টো থেকে করোনা বিধিনিষেধের কারণে কার্ফু জারি হয়ে যায়, তাই তৃণমূলের পরিকল্পনা বড় ধাক্কা খেয়েছিল৷ ২১ জুলাই পালন করতে গিয়ে পুলিশ হেফাজতে যেতে হয়েছিল তৃণমূল কর্মী সমর্থকদের। তাদের এই উৎসাহ দেখে খুশি হয়েছেন দলের শীর্ষ নেতৃত্ব। আগামীদিনে কি পরিকল্পনা করে তারা এগোবেন সেটা বুঝে নিতেই এবার কলকাতায় আসছেন তারা৷
সূত্রের খবর,আগাস্ট মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে ত্রিপুরার আট জেলার প্রতিনিধি আসবেন কলকাতায়। প্রতি জেলা থেকে আসবেন দু’জন করে। ছাত্র, যুব,মহিলা, তফশিলী,উপজাতি সহ বিভিন্ন সংগঠন মিলিয়েই কলকাতা আসবে এই প্রতিনিধি দল। ত্রিপুরার দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা আশিষলাল সিংহ জানিয়েছেন, ‘দলের সকলেই আমাদের কাজের প্রশংসা করেছেন। আমাদের সর্ব স্তরের কর্মীরা এতে দারুণ উৎসাহ পেয়েছেন। তাই আগামী দিনে আমাদের কি করণীয় হবে তা বুঝতেই আমরা মমতা বন্দোপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দোপাধ্যায় সাথে দেখা করতে চাই’।
২১ জুলাই পালনে বাধা আসলেও এখনই হার মানতে চাইছেন না কর্মীরা। এবার ২১ জুলাই পালনে ত্রিপুরাকে আলাদা গুরুত্ব দিয়েছিল তৃণমূল। কারণ পড়শি রাজ্যে প্রভাব বিস্তারের মাধ্যমেই তৃণমূল নিজেকে প্রসারিত করতে চেয়েছে। সেই মতো আগেভাগে ডাক পাঠানো হয়েছিল আশিস লাল সিং-কে। রাজনৈতিক মহলের মতে, ত্রিপুরাতেও বিজেপিকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কড়া চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিলে ২০২৪ এর লোকসভা ভোটের আগে জাতীয় স্তরে যে বার্তা যাবে তাতে বিজেপি বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলির সুবিধা হবে। দ্বিতীয়ত, মমতা বন্দোপাধ্যায় যে একমাত্র বিজেপি বিরোধী মুখ সেটাও বুঝিয়ে দেওয়া যাবে।
তাই ত্রিপুরায় এখন থেকেই সংগঠনের ঝাঁঝ বাড়াতে চাইছে তৃণমূল কংগ্রেস। এই সব বিবেচনা করেই পোস্টার, প্রজেক্টর দেখানো শুরু হয়। কিন্তু বাধ সাধছে করোনা। গত কয়েক মাস ধরেই ত্রিপুরার করোনা পরিস্থিতি সামাল দেওয়া যাচ্ছে না। সেই অজুহাত সামনে রেখেই বিপ্লব দেব সরকার তৃণমূলকে বেগ দিতে চাইছে। কার্ফু জারি। তাই জমায়েতে স্বাভাবিক ভাবেই না।
অবশ্য শুধু ত্রিপুরাই নয়। তৃণমূল নিজেদের অস্তিত্ব বৃদ্ধিতে মরিয়া। ফলে গুজরাট, উত্তরপ্রদেশের মতো রাজ্যগুলিতেও ২১ জুলাই পালন করেছে তারা। গুজরাটের ৩২ টি জেলায় জায়েন্ট স্ক্রিনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য শোনানোর ব্যবস্থা করা হয়েছিল। উত্তরপ্রদেশে গিয়েছিলেন খোদ সাংসদ সুখেন্দু শেখর রায়। তবে ত্রিপুরার ক্ষেত্রে এখন দেখার এই পরিস্থিতিতে কী রণকৌশল নেয় তৃণমূল কংগ্রেস।