এমন মানবিকতার পরিচয় মিলেছে আগেও। আরও একবার তা প্রমাণ করলেন বিবাদী বাগে কর্তব্যরত ট্রাফিক গার্ডের সার্জেন্ট তুহিন রায়চৌধুরী। অশীতিপর বৃদ্ধকে ঠায় রাস্তায় বসে থাকতে দেখে সন্দেহ হয়েছিল তাঁর। সেখান থেকেই উদ্ধার করা হয়। তাঁর উদ্যোগেই অবশেষে পাণ্ডুয়ার বাড়িতে ফিরলেন বৃদ্ধ। হারিয়ে যাওয়া অশীতিপর বৃদ্ধকে শহরের ফুটপাথ থেকে উদ্ধার করে গ্রামের বাড়িতে ফিরিয়ে আরও একবার নজির রাখলো কলকাতা পুলিশ। পান্ডুয়ায় গ্রামের বাড়ি থেকে কীভাবে কলকাতার রাজপথে পৌঁছলেন, তা নিজেও ঠাওর করতে পারেননি বৃদ্ধ।
ঘটনাটি ঘটে শনিবার সকাল ১০টা নাগাদ, বিবাদী বাগে। সেখানে দায়িত্বে ছিলেন তুহিনবাবু। তিনি লক্ষ্য করেন, কিছুটা দূরে ফুটপাথে বসে থাকা এক বয়স্ক ব্যক্তি শূন্য দৃষ্টিতে এদিক-ওদিক তাকাচ্ছেন। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করে তুহিনবাবু জানতে পারেন, বৃদ্ধ লোকটি অনেকক্ষণ ধরে কিছু খাননি। পেটের জ্বালায় কাতরাচ্ছেন। এই শুনে তৎপরতার সাথেই জল খাবারের ব্যবস্থা করেন ওই পুলিশকর্মী। কিছুটা ধাতস্থ হয়ে ওই বৃদ্ধ জানান তাঁর নাম মাধব মণ্ডল। বয়স আশির কাছাকাছি। বাড়ি হুগলি জেলার পান্ডুয়ায়। সঙ্গে সঙ্গে তুহিনবাবু হেডকোয়ার্টারে খবর পাঠান। সেখান থেকে খবর যায় হেয়ার স্ট্রিট থানায়। কিছুক্ষণের মধ্যেই ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন হেয়ার স্ট্রিট থানার সাব ইন্সপেক্টর শেখর সরকার। তিনি ওই বৃদ্ধকে সঙ্গে নিয়ে থানায় পৌঁছান।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, তাঁর চার ছেলের একজনেরও নাম ঠিকানা মনে করতে পারেননি তিনি। এমনকী, কীভাবে পান্ডুয়া থেকে কলকাতায় এলেন তাও মনে করতে পারেননি। পান্ডুয়ার বাসিন্দা এক সিভিক ভলান্টিয়ারের মাধ্যমে ওই বৃদ্ধের বাড়ি তালবনা গ্রামের খোঁজ পান ওই পুলিশ আধিকারিক।
পান্ডুয়া থানায় যোগাযোগ করে ওই বৃদ্ধের বাড়ি নিশ্চিত করা হয়। কিন্তু মাধববাবুর পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। ফলত বৃদ্ধকে গ্রামে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তারপর গাড়ি ভাড়া করে দুই সিভিক ভলান্টিয়ার ও এক কনস্টেবলের সঙ্গে ওই বৃদ্ধকে বাড়ি পাঠানো হয়। সেই অসহায় বৃদ্ধ পান্ডুয়া থানার সাহায্যে বাড়ি পৌঁছে পুলিশকে কৃতজ্ঞতা জানাতে ভোলেননি। তাঁর বিপদে পাশে দাঁড়াতে পেরে স্বস্তি পেয়েছেন পুলিশ আধিকারিকরাও।