পেগাসাস স্পাইওয়ারের মাধ্যমে সাংবাদিক ও মানবাধিকার কর্মীদের ওপরে নজর রাখা হচ্ছে। প্রায় ২ বছর আগে হোয়াটস অ্যাপ এ খবর জানানোর পরেই শোরগোল পড়ে গিয়েছিল দেশ জুড়ে। গত রবিবার ফের শোনা যায়, পেগাসাসের মাধ্যমে দু’জন মন্ত্রী, বিরোধী নেতা ও শিল্পপতি ও সাংবাদিকদের ফোনে নজরদারি চালানো হচ্ছে। সোমবার এই নিয়ে তুমুল হইচই হয় সংসদে। কিন্তু দু’বারই সরকার এই প্রশ্নের জবাব এড়িয়ে গিয়েছে, তারা সত্যিই ওই ইজরায়েলি সফটওয়ার কিনেছে কিনা।
সোমবার লোকসভায় সরকারের হয়ে বক্তব্য পেশ করেন নতুন তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী অশ্বিন বৈষ্ণো। সংসদের বাইরে বিজেপির তরফে বক্তব্য পেশ করেন প্রাক্তন তথ্যপ্রযুক্তিমন্ত্রী রবিশংকর প্রসাদ। তাঁরা দু’জনেই ব্যাখ্যা করেন, ফোনে আড়ি পাতার জন্য দেশে কী আইন আছে। কিন্তু বিরোধীরা বার বার প্রশ্ন করা সত্ত্বেও দু’জনেই যে প্রশ্নের জবাব দেননি, তা হল, সরকার কি পেগাসাস স্পাইওয়ার কিনেছে? যদি কিনে থাকে, কীভাবে তা ব্যবহার করা হচ্ছে?
বারবার কংগ্রেসের দিগ্বিজয় সিং, আনন্দ শর্মা এবং জয়রাম রমেশ প্রশ্ন করেন, ‘সরকারের সঙ্গে ইজরায়েলি সংস্থা এনএসও-র কি কোনও চুক্তি হয়েছে?’ এনএসও সংস্থাটিই পেগাসাস সফটওয়ার তৈরি করে। পরে জয়রাম রমেশ আরও স্পষ্ট করে জিজ্ঞাসা করেন, সরকার পেগাসাস সফটওয়ার কিনেছে না কেনেনি? তৃণমূলের নাদিমুল হক প্রশ্ন করেন, সরকার কি তদন্ত করে দেখবে, পেগাসাস সফটওয়ার কেউ কিনেছে কিনা? ওই সফটওয়ার একমাত্র সরকারেরই ব্যবহার করার কথা। সরকার কি অন্য কাউকে পেগাসাস সফটওয়ার ব্যবহার করার অনুমতি দিয়েছে?
সিপিএমের রাজ্যসভা সদস্য কে কে রাগেশও বলেন, ‘এনএসও বলেছে, তারা কেবল সরকারি সংস্থাকেই পেগাসাস বিক্রি করে। তাহলে ওই সফটওয়ার ভারতে এল কী করে? সরকার কি ওই সফটওয়ার কিনেছে?’ রবিশংকর প্রসাদ জবাবে বলেন, ‘কারও অভিযোগ থাকলে সে এফআইআর করতে পারে। কিন্তু আমি যতদূর জানি, কোনও বেআইনি কাজ হয়নি।’ তবে তিনি যে কথা জানাননি, তা হল, ইন্ডিয়ান কম্পিউটার এমার্জেন্সি টিম এনএসও-কে নোটিশ দিয়ে জানতে চেয়েছিল, ভারতে ওই ম্যালওয়ার ব্যবহার করা যায় কিনা। অশ্বিন বৈষ্ণোর দাবি, পেগাসাস ব্যবহারকারী দেশগুলির যে তালিকা করা হয়েছে, তাতে অনেক ভুল নাম ঢুকে গিয়েছে।