করোনা অতিমারী পরিস্থিতিতে জমায়েত এড়াতে গতবছর একুশে জুলাইয়ের ভার্চুয়াল সমাবেশ করেছিলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। করোনার তৃতীয় ঢেউয়ের কথা মাথায় রেখে এবারও সেই পথেই হাঁটছেন তিনি। তবে ২৭ বছরে পা রাখা একুশে জুলাই এবার রাজনীতি এবং আঙ্গিক, দুই দিক থেকেই তাৎপর্যপূর্ণ। এর আগে একুশের শহীদ তর্পণ মঞ্চ কখনও হয়ে উঠেছে বাম জমানা অবসানের সংকল্প মঞ্চ। কখনও বা পরিবর্তনের অনুপ্রেরণার। ২০১১-এর পর শহিদের স্মৃতি জড়ানো এই মঞ্চেই হয়েছে বিজয় সমাবেশ। আবার এই মঞ্চ থেকেই কেন্দ্রে বিকল্প সরকার গড়তে দিল্লী চলোর ডাক দিয়েছিলেন মমতা। এবার একুশের বিধানসভা নির্বাচনে জয় হাসিল করে তৃতীয় বার সরকার গঠনের পরে প্রথম একুশে জুলাই। রাজ্যে তৃতীয় বার সরকার গঠনের পরে তৃণমূলের লক্ষ্য এখন ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচন। তাই একুশের মঞ্চ থেকে কী দিশা দেন দলনেত্রী, সেদিকেই তাকিয়ে তৃণমূল শিবির।
করোনা সংক্রমণের আবহে একুশের ইতিহাসে এই নিয়ে দ্বিতীয় বার ভার্চুয়াল জমায়েতে মমতা। তবে এবারের একুশে জুলাই অন্য বছরের চেয়ে আলাদা। রাজনৈতিক মূল্যের পাশাপাশি আয়োজনের বিন্যাসেও। ১৯৯৩-এর ‘নো আইডেন্টিটি, নো ভোট’ এই স্লোগানকে হাতিয়ার করে রাইটার্স অভিযান করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন প্রদেশ যুব কংগ্রেস। পুলিশের গুলিতে প্রাণ হারান ১৩ জন তরতাজা যুবক। শহিদের স্মৃতি তর্পণে ১৯৯৪ থেকেই শুরু হয় একুশে জুলাইয়ের জনসমাবেশ। ২০১৩ সাল ছিল ব্যতিক্রম। ওই বছর বাদে প্রতি বছরই পালিত হয়েছে এই সমাবেশ। এবছর আরও একটি ব্যতিক্রম। ধারাবাহিকতা বজায় রেখেই আঙ্গিকে বড়সড় বদল৷ একুশে জুলাই ভার্চুয়াল প্ল্যাটফর্মেই দুপুর দুটোয় ভাষণ দেবেন দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
করোনা, ইয়াসের জেরে রাজ্যের অনেক জায়গাই বিধ্বস্ত৷ রাজ্যে বাকি বেশ কিছু আসনে বিধানসভা উপনির্বাচন। বাকি একাধিক পুরসভা নির্বাচন। এই পরিস্থিতিতে দলনেত্রীর রাজনৈতিক ভাষণের দিকে তাকিয়ে তৃণমূল। একদিকে নিজের দলের নেতা কর্মীদের বার্তা। অন্যদিকে বিরোধীদের জবাব। দলনেত্রীর ভাষণে এই দুইয়েরই ইঙ্গিত পেতে চায় দল৷ সাথে অপেক্ষা দলের নতুন সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দোপাধ্যায়ের ভাষণেরও। ইতিমধ্যেই ২১ জুলাই উপলক্ষ্যে নানা ব্যবস্থা করেছে তৃণমূল। এক সপ্তাহ বাকি থাকতেই সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রকাশ করা হয়েছে নানা টিজার। দলনেত্রী ইতিমধ্যেই বার্তা রেখেছেন। তিনি জানিয়েছেন, ‘কোভিড পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে এবার ২১শে জুলাই ভার্চুয়াল করা হবে। কারণ ডাক দিলে লাখো মানুষের জমায়েত হয়ে যাবে। রাজ্যে করোনা পরিস্থিতি অনেকটা নিয়ন্ত্রণে আসলেও এবারের ২১ শে জুলাই ভার্চুয়ালই হবে। প্রতি বুথে বুথে কর্মীরা থাকবেন। প্রকাশ করা হবে জাগো বাংলার নব সংস্করণ।’