চলতি মাসের ১ তারিখ থেকে শুরু হয়েছিল দুয়ারে ত্রাণ প্রকল্পের মাধ্যমে ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্তদের অ্যাকাউন্টে ক্ষতিপূরণ পৌঁছে দেওয়ার কাজ। এখনও সকল ক্ষতিগ্রস্তের অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠানো সম্ভব হয়নি। এই পরিস্থিতিতে শীঘ্রই বাকি ক্ষতিগ্রস্তের অ্যাকাউন্টে আগামী শুক্রবারের মধ্যে ক্ষতিপূরণের টাকা পাঠাতে হবে বলে নির্দেশ দিল নবান্ন। ইতিমধ্যেই দেড় লক্ষেরও বেশি মানুষ দুয়ারে ত্রাণে ক্ষতিপূরণের টাকা পেয়ে গিয়েছেন। তবে অনেক জেলাতে ঘূর্ণিঝড়ের পরেও আবহাওয়া ভাল না থাকায় আবেদনপত্র খতিয়ে দেখার কাজ ব্যাহত হয়েছে। আর তাই নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সবাইকে ক্ষতিপূরণ পাঠানো সম্ভব হয়নি। তবে এবার দ্রুত যাতে সবাই ত্রাণের টাকা পান, সেদিকে নজর দিল রাজ্য।
প্রসঙ্গত, আমফানের থেকে শিক্ষা নিয়ে ঘূর্ণিঝড় ইয়াসে ক্ষতিগ্রস্তদের সরাসরি ত্রাণ পাঠানোর কথা ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই প্রকল্পের ক্যাম্প শুরু হয়েছিল ৩ জুন থেকে। মাত্র একবছর আগে ঘূর্ণিঝড় আমফানের তাণ্ডবে কার্যত লন্ডভন্ড হয়ে যায় রাজ্য। সেবার পরিস্থিতি সামলাতে ও মানুষকে সাহায্যে করতে বিশেষ আর্থিক প্যাকেজ ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী। ত্রাণের কাজে ত্রিপল ও চাল-ডাল সামগ্রী পৌঁছে দেওয়ার জন্য পঞ্চায়েতের মাধ্যমে পরিষেবা দেওয়ার প্রক্রিয়া করেন। কিন্তু কিছু জায়গায় ত্রিপল চুরি, ত্রাণের চাল চুরি ও ক্ষতিগ্রস্তদের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ তুলে বিষয়টিকে বিধানসভা নির্বাচনে ইস্যু করে বিজেপি। আর তাই এবার ত্রাণ বণ্টনে কোও ফাঁক রাখতে চাননি মুখ্যমন্ত্রী।
ঘূর্ণিঝড় যশের কবলে বেশ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে পূর্ব মেদিনীপুর, দক্ষিণ ২৪ পরগনায়। তাই মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণা করেছিলেন, বিপর্যস্ত এলাকার বাসিন্দাদের দুয়ারে ত্রাণ পৌঁছে দেবে রাজ্য। এই কাজের জন্য তাঁর সরকার ১ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করে সরকার। প্রতিটি ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় ক্যাম্প করে আবেদন গ্রহণ করেন সরকারি আধিকারিকরা। আবেদন সরাসরি চলে যায় জেলাশাসকের দফতরে। জেলাশাসক এই তালিকা যাচাই করেন বিডিওদের মাধ্যমে। ৩ থেকে ১৮ জুন পর্যন্ত ক্ষতিগ্রস্ত জেলাগুলিতে আবেদন জমা নেওয়া হয়। এরপর চলে যাচাইয়ের কাজ। ৩১ জুন পর্যন্ত এই সমস্ত আবেদনপত্র যাচাই করার কাজ চলে। তবে অনেক জায়গায় যাচাইয়ে দেরি হওয়ায় কয়েকজন ক্ষতিগ্রস্তের অ্যাকাউন্টে এখনও যায়নি ক্ষতিপূরণের টাকা। সেই ক্ষতিগ্রস্তরা যাতে দ্রুত টাকা পান, সেই নির্দেশ দিলেন মুখ্যমন্ত্রী।