বরাবরই মোদী সরকারের সমালোচক হিসাবে পরিচিত তিনি। এই করোনা কালেও কেন্দ্রের ভূমিকা নিয়ে একাধিকবার মুখ খুলতে দেখা গিয়েছে তাঁকে। এবার ফের একবার কেন্দ্রীয় সরকারের ভূমিকা নিয়ে নাম না করে প্রধানমন্ত্রীকেই তীক্ষ্ণ সমালোচনায় বিঁধলেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন। একটি ইংরাজি দৈনিকে সমসাময়িক নানান ঘটনা, দেশের পরিস্থিতি, অন্য দেশের সঙ্গে অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপটে ফারাক— ইত্যাদি বিষয়ে দীর্ঘ সাক্ষাৎকার দিয়েছেন অমর্ত্য। সেখানেই তিনি স্পষ্ট করে বলেছেন, ভারতে পাবলিক ডিসকাশন তথা প্রকাশ্যে আলাপ-আলোচনার বিষয়টাই আস্তে আস্তে তুলে দেওয়া হচ্ছে। যা কোভিড পরিস্থিতিতে গরিব মানুষকে আরও ভয়ঙ্কর পরিস্থিতির মধ্যে ঠেলে দিয়েছে।
স্পষ্টতই তিনি বলেছেন, একমাত্র প্রকাশ্য আলোচনা-সমালোচনাই গরিব মানুষকে এই অতিমারীর কবল থেকে টেনে তুলতে পারে। উদাহরণ দিতে গিয়ে ১৯৪৩ সালের দুর্ভিক্ষের প্রসঙ্গ তুলে তিনি বলেন, ‘দুর্ভিক্ষ খুব বেশি হলে ৫-১০ শতাংশের উপর প্রভাব ফেলে। কিন্তু সেই সময়ে ব্রিটিশ সরকার সংবাদমাধ্যমকে দুর্ভিক্ষের কথা প্রচার করতে দেয়নি। খাদ্যের অভাব নিয়ে এক কলমও লিখতে দেওয়া হয়নি। কেউ সাহস করে তা করার চেষ্টা করলে তা বন্ধ করার জন্য নখদন্ত বের করে যা করার তাই করেছিল। কেন? তার কারণ শাসকের ভয় ছিল, দুর্ভিক্ষের কবলে পাঁচ থেকে দশ শতাংশ মানুষ পড়লেও সে কথা বেশি জানাজানি হলে আরও বড় অংশের মানুষ গর্জন উঠতে পারে।’
আলোচনা-সমালোচনার প্রশ্নে সংবাদমাধ্যমের ভূমিকার কথায় বেশি করে গুরুত্ব আরোপ করেছেন অমর্ত্য সেন। তিনি বলেছেন, সংবাদমাধ্যমের ভূমিকা নেওয়ার ক্ষেত্রে অদৃশ্য বাধা কাজ করছে। এ ব্যাপারে কোনও সন্দেহ নেই, বিরোধী দলগুলি বারবার বলে মোদী জমানায় জাতীয় স্তরে সংবাদমাধ্যমের কণ্ঠ রোধ হচ্ছে। এমনকি বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিতেও এই অভিযোগ বিস্তর। পর্যবেক্ষকদের মতে, নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ সেটিকেই বোঝাতে চেয়েছেন।