এবার গড়িয়াহাট কাণ্ডে ধৃত সনাতন রায়চৌধুরীর গেরুয়া-যোগের প্রমাণ পেল পুলিশ। বিজেপি যোগ ও বিশ্ব হিন্দু পরিষদের কার্যকর্তার সার্টিফিকেট ও একাধিক নথি বাজেয়াপ্ত করল কলকাতা পুলিশ। বিজেপির সঙ্গে ও বিশ্ব হিন্দু পরিষদের সঙ্গে সরাসরি যোগের প্রমাণ রয়েছে সনাতনের, দাবি পুলিশের। পুলিশ সূত্রে খবর, সনাতনকে জেরা করে মিলেছে একাধিক প্রমাণের নথি। বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে কৃষ্ণা ভট্টাচার্য বিজেপির প্রাক্তন ভাইস প্রেসিডেন্ট তথা ইলেকশন কমিটি মেম্বারের লেখা চিঠি, যেখানে সনাতনের সঙ্গে তাঁর সরাসরি যোগের প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে। এমনকী এই সনাতন একটি আইন নিয়ে বই লিখেছিল, তারও উল্লেখ রয়েছে চিঠিতে। বিগত ২০১৮ সালের ১৭ই জুলাই লেখা ওই চিঠি বা সার্টিফিকেটের কপি বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ।
পাশাপাশি, দক্ষিণবঙ্গ বিশ্ব হিন্দু পরিষদের ভাইস প্রেসিডেন্ট চন্দ্রনাথ দাসের লেখা চিঠি বা নথিতেও সনাতন রায় চৌধুরী বিশ্ব হিন্দু পরিষদের সঙ্গে যুক্ত ছিল, সেই প্রমাণ মিলেছে। ২০১৭ সালের ২৫শে জুনের ওই সার্টিফিকেটটিও বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ। অর্থাৎ বিজেপি যোগ ও বিশ্ব হিন্দু পরিষদের সঙ্গে গড়িয়াহাটকাণ্ডে ধৃত সনাতন রায় চৌধুরীর যোগের প্রমান মিলেছে, দাবি পুলিশের। এর আগে বিজেপি নেতা রুদ্রনীল ঘোষের সঙ্গে ছবিতে দেখা গিয়েছিল সনাতনকে। কিন্তু রুদ্রনীল জানিয়েছিলেন, “পাঁচ বছর আগে পরিচিতের মাধ্যমে আইনজীবী হিসাবে পরিচয় হয়েছিল, তখন একটি ছবি তুলেছিলেন। কিন্তু সনাতনের মতো ভুয়ো সরকারি অফিসারের পরিচয় দিয়ে যারা নীল বাতির গাড়ি নিয়ে ঘুরছেন, তাদের কঠোর শাস্তির প্রয়োজন।”
উল্লেখ্য, এবার শুধু বিজেপি নেতার ছবি নয়, বিজেপি ও বিশ্ব হিন্দু পরিষদের সঙ্গে যোগাযোগের প্রমাণ মিলেছে। সেই সব নথি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। সনাতন দক্ষিণ আফ্রিকার জোহানেসবার্গে ব্রিকস সম্মেলন ও ইন্দো-জাপান বিজনেস সামিটে অংশগ্রহণ করেছিল ভারতীয় প্রতিনিধি হিসাবে। কীভাবে সম্ভব হল ওই অনুষ্ঠানে যাওয়া? কার মাধ্যমে পৌঁছল সনাতন? উঠছে প্রশ্ন। ভারতীয় প্রতিনিধি হিসেবে ওই অনুষ্ঠানগুলিতে অংশগ্রহণ করতে গেলে কেন্দ্রীয় সরকারের অনুমতি, প্রোটোকল ছাড়া কীভাবে পৌঁছল সনাতনের মতো একজন ভুয়ো সরকারি আধিকারিক? এই বিষয়গুলো খতিয়ে দেখছে গড়িয়াহাট থানা। এর আগে কখনও লন্ডন, কখনও দক্ষিণ আফ্রিকা বা অন্য দেশে বারবার গিয়েছিল বলে পুলিশের কাছে দাবি সনাতনের। বারবার বিদেশে যেতে প্রচুর অর্থের প্রয়োজন। সেই আয়ের উৎস কোথায়? কোথা থেকে আসত এত টাকা? তা জানতে পুলিশের নজর সনাতনের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের ওপর। সনাতনের অ্যাকাউন্ট খতিয়ে দেখবে পুলিশ। তার নামে কতগুলো অ্যাকাউন্ট রয়েছে, তা জানতে শীঘ্রই ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলবে পুলিশ।