নরেন্দ্র মোদী ‘না খাউঙ্গা, না খানে দুঙ্গা’ বলে দূর্নীতিমুক্ত সরকারের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। অথচ তাঁরই মন্ত্রী হরিভাই পার্থিভাই চৌধুরির বিরুদ্ধে ‘কয়েক কোটি টাকা’ ঘুষ নেবার অভিযোগ তুললেন সিবিআই-এর ডিআইজি মনীশ কুমার সিনহা।
এখানেই শেষ নয়। ক্যাবিনেট সচিব পি কে সিন্হা, আইন মন্ত্রকের সচিব সুরেশ চন্দ্র, মুখ্য ভিজিল্যান্স কমিশনার কে ভি চৌধরির দিকেও অভিযোগের আঙুল তুলেছেন মনীশ। তাঁর অভিযোগ, এরা সকলে মিলে মোদী-শাহের আস্থাভাজন অফিসার রাকেশ আস্থানার বিরুদ্ধে তদন্ত ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করেছিল। এমনকি জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভালও এই মামলায় হস্তক্ষেপ করেছিলেন বলে অভিযোগ মনীশের।
উল্লেখ্য, অভিযুক্ত মন্ত্রী হরিভাই চৌধরি মোদী ঘনিষ্ঠ গুজরাতের নেতা। বর্তমানে তিনি কয়লা ও খনি মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী। এর আগে তিনি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী ছিলেন।
অভিযোগকারী সিবিআই কর্তা মনীশ কুমার সিনহা নীরব মোদীর পলায়নের তদন্ত করছিলেন। মনীশের অভিযোগ, তদন্তকে পথভ্রষ্ট করার জন্যই রাতারাতি তাঁকে নয়াদিল্লী থেকে নাগপুরে বদলি করা হয়। প্রতিবাদে আদালতের দ্বারস্থ হয়েই একগুচ্ছ অভিযোগ করেছেন তিনি।
মণীশের দাবি, তিনি সিবিআইয়ের স্পেশাল ডিরেক্টর রাকেশ আস্থানার বিরুদ্ধে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগের তদন্ত করছিলেন। এই অভিযোগ দায়ের করেছিলেন, হায়দরাবাদের ব্যবসায়ী সতীশ বাবু সানা। এই সানা নিজে মাংস ব্যবসায়ী মইন কুরেশির বিরুদ্ধে মামলায় অন্যতম অভিযুক্ত। জেরার মুখে সানা জানান, তিনি ২০১৮-র জুনে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হরিভাইকে কয়েক কোটি টাকা ঘুষ দেন। এর পর হরিভাই সিবিআইয়ের উচ্চপদস্থ কর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে তিনি প্রধানমন্ত্রী দফতরের অধীন কর্মিবর্গ দফতরের মন্ত্রীর দফতরকে কাজে লাগান। কারণ সিবিআই ডিরেক্টর ওই মন্ত্রীরই অধীনে।
মনীশের আরও দাবি, ‘রাকেশ আস্থানার বিরুদ্ধে তদন্তের সময় যখন আরেক সিবিআই অফিসার দেবেন্দ্র কুমারের বাড়িতে তল্লাশি করছিলাম, তখনই সিবিআই ডিরেক্টর ফোন করে তদন্ত থামাতে বলেন। ডোভালই এই নির্দেশ দিয়েছিলেন’।
মণীশের দাবি ছিল, মঙ্গলবার অলোক বর্মার মামলার শুনানির সঙ্গেই তাঁর মামলার শুনানি হোক। কিন্তু প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ সেই আর্জি খারিজ করে দেন। মণীশের আইনজীবী যুক্তি দেন, বিচলিত হওয়ার মতো তথ্য রয়েছে মামলার পিটিশনে। প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘কিছুই আর আমাদের বিচলিত করে না!’ তিনি জানান, মঙ্গলবার শুধু বর্মার মামলারই শুনানি হবে।
সিবিআই কর্তার এমন বিস্ফোরক দাবি অস্ত্র তুলে দিয়েছে কংগ্রেসের হাতে। সরাসরি প্রধানমন্ত্রীর কাছে জবাবদিহি করেছে রাহুল গান্ধীর দল। ঘটনায় বিজেপিরই সাংসদ সুব্রক্ষন্যম স্বামীর কটাক্ষ, ‘রাকেশ আস্থানা কি ২০১৯-এর মহাভারতের দুর্যধন হবে?’